মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন রাস্তায় এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শোভন রহমান বলেন, ‘একশ্রেণির মানুষ ধর্মীয় উসকানির জন্য ওঁৎপেতে আছে। তারা শিক্ষার উন্নয়ন চায় না। হৃদয় মণ্ডল ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলেননি। বরং যারা এই কাজ করেছে তারা এই সম্পর্কে অজ্ঞ। হৃদয় মণ্ডল নয় বরং যারা শিক্ষার্থীদের হাতে মোবাইল তুলে দিয়ে তার অনুমতি ব্যতীত ক্লাসে রেকর্ড করেছে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের জাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ ইসলাম বলেন, ‘ওআইসিতে যোগদানের মাধ্যমে এদেশে সাম্প্রদায়িকতা শুরু হয়। একটি গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে। বাস্তবে তার ধারে কাছে নেই। তারা বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষকদের নষ্ট করে দিচ্ছে। তারা শুভবুদ্ধির বিকাশ করতে দেবে না। যারা ভালোর কথা বলতে যায় তাদের শেষ করে দিতে চায় তারা।’
সমাপনী বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি আবু সাইদ বলেন, ‘একশ্রেণির মানুষ ধর্মীয় উগ্রবাদকে উসকে দিচ্ছে। হৃদয় মণ্ডল বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ। তাকে গ্রেফতার করে পারিবারিক, সামাজিক জীবন নষ্ট করা হয়েছে। কালক্ষেপণ না করে তাকে মুক্তি দিন। না হয় আমরা বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলবো।’
উল্লেখ্য, গত ২২ মার্চ সকালে বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় বিচারের দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা, তাতে যোগ দেউ এলাকাবাসী। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহম্মেদ পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মন্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের ইলেকট্রিশিয়ান মো. আসাদ বাদী হয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে মামলা করেন। গত ৪ এপ্রিল মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-১-এ শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে হৃদয় মণ্ডলকে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে রবিবার (১০ এপ্রিল) আবারও জামিন শুনানি হবে বলে জানা গেছে।