ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর নৃশংসতা ঘিরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মিত্র দেশগুলো থেকে রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কারের হিড়িক শুরু হয়েছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় ইতালি, ডেনমার্ক এবং সুইডেন থেকে রাশিয়ার ১২০ জনের বেশি কূটনীতিক বহিষ্কার করা হয়েছে।
রাজধানী কিয়েভের পার্শ্ববর্তী শহর বুচায় শত শত মানুষকে রুশ সৈন্যদের হত্যাকাণ্ডের জেরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপক ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় শুরু হয়েছে। বুচায় শত শত মানুষকে হত্যার পর রুশ সৈন্যরা গণকবর দিয়েছে। রুশ সৈন্যরা চলে যাওয়ার পর এখন শহরটিতে গণকবরের সন্ধান এবং সড়কে সড়কে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইগি ডি মিয়াও বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তা বিবেচনায় আমরা রাশিয়ার ৩০ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছি। তার আগে সোমবার ৩৫ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ফ্রান্স। একই দিনে ৪০ রুশ কূটনীতিককে রাশিয়ায় ফেরত পাঠিয়েছে জার্মানি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর আগ্রাসন এবং বুচায় ভয়াবহ গণহত্যার জবাবে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করেছে লিথুয়ানিয়া।
ইতালি ছাড়াও মঙ্গলবার সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়ে রাশিয়ার তিন কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে, গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে রাশিয়ার ১৫ ‘গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে’ বহিষ্কার করেছে ডেনমার্ক। বুচায় ইউক্রেনের নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার বর্বরতার নিন্দা জানিয়েছে দেশটি।
তবে বুচা এবং কিয়েভের আশপাশের অন্যান্য শহরে বেসামরিক নাগরিক হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ অস্বীকার করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ইউক্রেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে মঙ্গলবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে।
ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপির পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মস্কো ইউক্রেন আক্রমণ শুরু করার পর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশ এখন পর্যন্ত ২৩০ জনের বেশি রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে।
গত ২৯ মার্চ কূটনীতিক বহিষ্কারের প্রতিশোধে লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া এবং এস্তোনিয়ার ১০ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে রাশিয়া। মঙ্গলবার রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার গ্রুশকো বলেছেন, এটি যে পূর্ব-পরিকল্পিত এবং সমন্বিত পদক্ষেপ, সেটি পরিষ্কার। মস্কো অবশ্যই প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেবে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।