ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় সাজিদ (১৬) নামে এক কিশোরকে গলাকেটে হত্যার দুই দিনের মাথায় এর রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের হান্নান (৪৫) ও তার মামাতো ভাই ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আরমান (১৯)।
বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) খন্দকার ফজলে রাব্বী।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হান্নান গাজীপুরের ভবানীপুর এলাকায় স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে বসবাস করত। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে পুরো সংসারের ব্যয়ভার বহন কঠিন হয়ে উঠেছিল তার। সেজন্য হান্নান তার স্ত্রী রুনা বেগমকে পোশাক কারখানার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে বলেন। সেই কারখানায় রুনার সঙ্গে কাজ করত হত্যাকাণ্ডের শিকার সাজিদের বড় ভাই রবিউল আওয়াল শুভ (১৮)। একই কারখানায় কাজের সুবাদে শুভও একই এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। একপর্যায়ে শুভর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে রুনা বেগমের। যার পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ মাস আগে সন্তানদের স্বামীর ঘরে ফেলে রেখে শুভর সঙ্গে পালিয়ে নতুন করে সংসার শুরু করেন রুনা।
খন্দকার ফজলে রাব্বী আরও বলেন, ২০ বছরের সংসার জীবনের অনাকাঙ্ক্ষিত ভাঙনের পর প্রতিশোধপরায়ন হয়ে ওঠেন হান্নান। সেই আক্রোশে শুভ বা তার পরিবারের কাউকে হত্যা করে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে সে। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক হান্নান তার মামাতো ভাই আসামি আরমানের (১৯) সঙ্গে যোগাযোগ করে নান্দাইল আসে। গত ২৬ মার্চ দিবাগত রাত ১ টার দিকে একটি ধারালো ছুরি নিয়ে সাজিদের ঘরে ঢুকে তাকে গলাকেটে হত্যা করর হান্নান ও আরমান।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার পরদিন নিহতের মা এসমিন আক্তার (৩৭) বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। সেই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত সময়েই হত্যার রহস্য উদঘাটন ও জড়িত দুইজনকে মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) রাতে সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরে আসামিদের তথ্য অনুযায়ী ঘটনাস্থলের কিছু দূরে একটি পুকুর পাড় থেকে তাদের পরিহিত রক্তমাখা জামা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরিটি উদ্ধার করা হয়।
আসামিদের আদালতে তোলা হয়েছে বলেও জানান ডিবির ওসি।