টানা একমাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। রুশ আগ্রাসন রুখতে পাশ্চিমা দেশগুলো প্রথম থেকেই মস্কোবিরোধী নিষেধাজ্ঞার ঝুড়ি নিয়ে দাঁড়িয়েছে কিয়েভের পাশে। এর পাশাপাশি পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিকে পশ্চিমারা অস্ত্র সহায়তা দিলেও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট চান আরও।
এই পরিস্থিতিতে শনিবার (২৬ মার্চ) রাতে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে আবারও অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম চেয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রোববার (২৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আলজাজিরা।
বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনে আরও প্লেন, ট্যাংক ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করতে পশ্চিমা সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শনিবার গভীর রাতে দেওয়া ওই ভিডিওবার্তায় তিনি আরও বলেন, ইউরোপে স্বাধীনতা রক্ষা করতে সক্ষম ভারী অস্ত্রগুলো (ইউক্রেনকে দেওয়ার) পরিবর্তে কেবল ধুলোর মধ্যে মজুত করে রাখা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, কেবল মেশিনগান দিয়ে গুলি করে রুশ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা সম্ভব নয়। এরপরই মূলত সামরিক জোট ন্যাটোর ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
জেলেনস্কি বলেন, ‘ন্যাটো কি করছে? এটি কী রাশিয়া পরিচালনা করছে? তারা (ন্যাটো) কিসের জন্য অপেক্ষা করছে? (হামলা শুরুর পর) ৩১ দিন পার হয়ে গেছে। ন্যাটোর যা আছে আমরা কেবল তার ১ শতাংশ চাই, বেশি কিছু না।’
স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডুয়ার্ড হেগার বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন যে, তার দেশ সোভিয়েতের তৈরি এস-৩০০ বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ইউক্রেনে পাঠাতে ইচ্ছুক।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর এক সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির বহু শহর কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ৩০ লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয়।