সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ ওয়ানডে ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৯ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ দল। দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে এটাই বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়। ম্যাচের শুরুতে ব্যাট করতে নেমে তাসকিনের বিধ্বংসী বোলিংয়ে মাত্র ১৫৪ রানেই গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে খেলতে নেমে ২৩.৩ ওভার এবং ৯ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা।
সিরিজ শুরুর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে জয়ের কোনো নজির ছিল না সফররত বাংলাদেশের। সেঞ্চুরিয়নে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৮ রানে প্রোটিয়াদের হারিয়ে সেই আক্ষেপ ঘুচান রাসেল ডোমিঙ্গোর শিষ্যরা। এরপর ঘাড়ে চাপে সিরিজ জয়ের নেশা। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বড় জয় নিয়ে সমতায় ফেরেন টেম্বা বাভুমা বাহিনী। ফলে তৃতীয় ম্যাচটি দাঁড়ায় অঘোষিত ফাইনালে।
ম্যাচের শুরুতে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ব্যাট হাতে শুরুটা ভালই করে দুই ওপেনার। তবে বেশিক্ষণ এই জুটি টিকতে দেননি বাংলাদেশি স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। তার বলে ব্যক্তিগত ১২ রানে আউট হন কুইন্টন ডি কক।
এরপর কাইল ভেরেইনেকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন। আউট হওয়ার পূর্বে ৯ রান করেন প্রোটিয়া উইকেটকিপার। নিজের দ্বিতীয় উইকেট হিসেবে প্রোটিয়া ওপেনার জানেমান মালান আউট করেন তাসকিন। মালান ব্যাট হাতে তুলেন ৩৯ রান। আর সাকিবের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁড়ে পড়ার আগে ২ রান করেন বাভুমা। ডুসেন করেন ৪ রান। ডুয়াইন প্রিটোরিয়াস করেন ২০ রান।
চাপে পড়া দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে আর দাঁড়াতেই দেননি তাসকিন-সাকিব-শরিফুলরা। ক্রমান্বয়ে পড়তে থাকে একের পর উইকেট।
এর মাঝে ভরসায় প্রতীক হয়ে উঠছিলেন দলের অভিজ্ঞ হার্ডহিটার ব্যাটার ডেভিড মিলার। কিন্তু তাকেও দাঁড়াতে দেননি তাসকিন। আউট হন ১৬ রানে। এছাড়া ৪ রানে ক্যাগিসো রাবাদা, শূন্যরানে এনগিদি এবং ২৮ রানে কেশব মাহারাজ আউট হন। আর ৩ রানে অপরাজিত থাকেন তাব্রিজ সামসি।
রান তাড়া করতে নেমে ওপেনিং জুটিতেই ১২৭ রান তুলেন দুই বাংলাদেশি ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। দুজনই এগোচ্ছিলেন ফিফটির পথে। তবে ইনিংসের ২১তম ওভারে মাহারাজের বলে আউট হন তিনি। ফেরার আগে ৫৭ বলের ইনিংসটি সাজান ৮টি চার দিয়ে। দুই জনের ১২৭ রানের ওপেনিং জুটির পর সাকিবকে নিয়ে জয়ের বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন তামিম।
৯ উইকেটে পাওয়া জয়ের পরেও খানিক আফসোসে করার জায়গা আছে তামিমের। প্রতিপক্ষ আর কিছু রান করলে সেঞ্চুরিটা পেয়ে যেতে পারতেন তিনি। তবে এমন ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের কাছে এমন আফসোস ধোপে টেকার কথা নয়। ৯ উইকেট আর ১৪১ বল হাতে রেখে পাওয়া জয়ে তামিম অপরাজিত থাকেন ৮২ বলে ৮৭ রানে। যেখানে কোনো ছয় না মারলেও বাউন্ডারি মারেন ১৪টি। সঙ্গে ২০ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব আল হাসান।