হত্যাচেষ্টা মামলার কয়েকজন “পলাতক” আসামিকে সঙ্গে নিজের জন্মদিনে কেক কেটে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের অপরাধে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণিকে প্রত্যাহার করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামানের সই করা এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশে এ কথা জানানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, থানায় পলাতক আসামিদের সঙ্গে কেক কেটে চকরিয়া থানার ওসির জন্মদিন পালন, তাদের কেক খাইয়ে দেওয়া এবং তাদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এ কারণে তাকে প্রত্যাহার করে কক্সবাজার পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
গত ২ মার্চ ছিল চকরিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণির জন্মদিন। ওইদিন বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হত্যাচেষ্টা মামলার পলাতক আসামি আরহান মাহমুদ ওরফে রুবেলের সঙ্গে কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণির জন্মদিন উদযাপনের কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়ে।
সেখানে দেখা যায়, আকাশি রঙের পাঞ্জাবি পরিহিত ওসি ওসমান গণি মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন। তার বাঁয়ে কালো কোট পরিহিত আরহান, আলিফসহ কয়েকজন ওসির মুখে জন্মদিনের কেক তুলে দিচ্ছেন। ওসমান গণি নিজেও আরহানকে কেক খাইয়ে দেন। এরপর আরহানের সঙ্গে যাওয়া তরুণদের সঙ্গে নিয়ে তিনি ফটোসেশন করেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শক্রতা এবং সংগঠনে প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল রাতে চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরহান মাহমুদ রুবেলের (২৪) নেতৃত্বে ২০-২২ জনের একটি দল কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সদস্য তারেকুল ইসলাম রাহিতকে কুপিয়ে জখম করে। সে সময় তারেকুলের মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করা হয়।
এ ঘটনায় তারেকুলের ছোট ভাই তানজীমুল ইসলাম বাদী হয়ে রুবেলকে প্রধান আসামি করে চকরিয়া থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। মোহাম্মদ আলিফকে মামলার ৬ নম্বর আসামি করা হয়। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এজাহারে উল্লেখ করা ১০ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ১০ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
কিন্তু এরপর থেকে আসামি আরহান মাহমুদ রুবেল ও মোহাম্মদ আলিফকে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজে না পাওয়ার দাবি করে আসছিলেন চকরিয়া থানার ওসি ওসমান গনি। অথচ গত ২ মার্চ তাকে নিয়ে থানায় বসে জন্মদিনের কেক কাটেন। এতে আরও কিছু তরুণ কেক কাটার উৎসবে অংশ নেন।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার প্রত্যাহার হওয়া ওসি ওসমান গণির সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।