সিলেটের বিজ্ঞানলেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ৩০ মার্চ। মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে সোমবার (১৪ মার্চ) সিলেট সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব রায় ঘোষণার এই তারিখ নির্ধারণ করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সমর বিজয় শেখর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি আগে শেষ হলেও সোমবার পলাতক তিন আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ধার্য ছিল। এ দিন তিন পলাতক আসামি ফয়সল আহমদ, হারুন অর রশিদ ও আবুল হোসেনের পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে আদালত আলোচিত এ মামলাটির রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন।
এর আগে ৮ মার্চ আদালতে এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে। ৯ মার্চ বাদীপক্ষের শুনানি শেষ হয়। ১০ মার্চ এ মামলায় কারাগারে থাকা আসামি আবুল খায়ের ওরফে রশিদ আহমদ ও শফিউর রহমান ফারাবীর শুনানি শেষ হয়।
২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নূরানী আবাসিক এলাকার নিজ বাসার সামনে খুন হন ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ। পেশায় ব্যাংকার অনন্ত বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি ‘‘যুক্তি’’ নামে একটি বিজ্ঞানবিষয়ক পত্রিকা সম্পাদনা করতেন।
হত্যার পরদিন তার বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।
থানা পুলিশের কাছ থেকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয় অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি)। সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৯ মে ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
অভিযুক্তরা হলো- সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫), কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এ বি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪), কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫) ও সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় বসবাসকারী সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান (৩০)।
আসামিদের মধ্যে ফারাবী বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
এছাড়া, আসামি মান্নান রাহী আদালতে অনন্ত হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। তবে ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর কারাগারে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় এই অভিযুক্তের। এছাড়া আবুল হোসেন, ফয়সাল আহমদ ও মামুনুর রশীদ নামে তিন আসামি এখনও পলাতক।