দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক পদের হারানো চাকরি ফেরত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন আলোচিত কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন। রবিবার (১৩ মার্চ) শরীফ উদ্দিনের পক্ষে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন।
শরীফ উদ্দিনের আইনজীবী জানান, বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আবেদনের শুনানি হতে পারে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে অনলাইন গণমাধ্যম বিডিনিউজ।
এ বিষয়ে মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক বলেন, “রিট আবেদনটি নিয়ে শুনানির জন্য আগামীকাল সোমবার (১৪ মার্চ) আদালতের দ্বারস্থ হবো, যদি আদালত গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন তাহলে কালই শুনানি হতে পারে।”
এদিকে, শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবীর করা রিট আবেদনটি আদেশের জন্য আগামী ১৫ মার্চ দিন ধার্য করে রেখেছে।
রিট আবেদনকারি ১০ আইনজীবী হলেন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, রেজওয়ানা ফেরদৌস, জামিলুর রহমান খান, উত্তম কুমার বণিক, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. তারেকুল ইসলাম, মীর ওসমান বিন নাসিম, সৈয়দ মোহাম্মদ রায়হান, মো. সাইফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ নওয়াব আলী।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কোনো ধরনের কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সই করা প্রজ্ঞাপন জারি করে দুদক কর্মচারি চাকরি বিধিমালা ২০০৮ এর ৫৪(২) ধারায় শরীফকে অপসারণ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮- এর বিধি ৫৪ (২) তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। তিনি বিধি মোতাবেক ৯০ দিনের বেতন এবং প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা (যদি থাকে) পাবেন। কমিশনের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো। যা ১৬ ফেব্রুয়ারি অপরাহ্ন থেকে কার্যকর গণ্য হবে।”
পরদিন এই আদেশ প্রত্যাহার ও ৫৪(২) বিধি বাতিলের দাবিতে দুদক সচিবকে স্মারকলিপি দেন কমিশনের কর্মকর্তারা। পাশাপাশি দুদকের প্রধান কার্যালয়সহ সংস্থাটির অন্যান্য দপ্তরে মানববন্ধন হয়।
শরীফ উদ্দিনের দাবি, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়ে তাকে চাকরিচ্যুত হতে হয়েছে।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, শরীফ উদ্দিনকে “শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে” বিধি অনুযায়ী চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
পরে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি চাকরি ফেরত চেয়ে কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদনপত্র জমা দেন শরীফ। আবেদন জমা দেওয়ার পর কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের আশ্বাস না পেয়ে অবশেষে চাকরি ফেরত চেয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হলেন দুদকের সাবেক এ কর্মকর্তা।