ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহে নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের কমিটি অন ওয়ার্ল্ড ফুড সিকিউরিটির প্রধান গ্যাব্রিয়েল ফেরারো দে লোমা-ওসরিও৷ তিনি জানান, বিশ্বে এখন প্রতিদিন ৮২ কোটির বেশি মানুষ পেটে ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যান।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৩৬তম কনফারেন্স উপলক্ষ্যে ঢাকা সফরে থাকা এই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, “মহামারির আগেও আমরা ভালো করছিলাম না, ক্ষুধা ধীরে ধীরে বাড়ছিল। এরপর মহামারি এলো। মহামারির আগে যত মানুষ ক্ষুধায় ভুগতো সেই সংখ্যাটা এখন ১৬ কোটির বেশি বেড়েছে৷ ফলে বর্তমানে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ৮২ কোটির বেশি।”
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহ ও দামের উপর বড় প্রভাব ফেলেছে বলে উল্লেখ করে তিনি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে দেশগুলোকে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের মোট গম ও যব রপ্তানির এক-তৃতীয়াংশ করে রাশিয়া ও ইউক্রেন৷ এছাড়া ইউক্রেন ভুট্টার অন্যতম সরবরাহকারী এবং সূর্যমুখী তেলের শীর্ষ রপ্তানিকারক। ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্বব্যাপী গম সরবরাহে এখনও বাধা না আসলেও যুদ্ধ শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ আগের তুলনায় দাম প্রায় ৫৫% বেড়ে গেছে। বাংলাদেশের মোট গম আমদানির প্রায় অর্ধেক আসে ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে।
এদিকে, যে সম্মেলনে জাতিসংঘের কর্মকর্তা লোমা-ওসরিও ঢাকা সফরে ঢাকা এসেছিলেন বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) সেটির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ উদ্বোধনী ভাষণে তিনি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনটি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
প্রথম প্রস্তাবে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে কৃষি গবেষণা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর সুপারিশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে শেখ হাসিনা এ অঞ্চলের এফএও সদস্য দেশগুলোর মধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে বায়োটেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি এবং রোবটিক্সের মতো আধুনিক প্রযুক্তি হস্তান্তর ও জ্ঞান বিনিময় বাড়ানোর কথা বলেন।
তৃতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, “আধুনিক কৃষিতে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন, তাই কৃষিতে অর্থায়ন ও সহায়তার জন্য বিশেষ তহবিল তৈরি করা যেতে পারে।”