নীরবে-নিভৃতে চলাফেরা করেন মুরাদ, ডাকে না দলের কেউ

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

একসময় প্রচার মাধ্যমে ব্যাপক সক্রিয় সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এখন নীরবে-নিভৃতে চলাফেরা করেন। আগের মতো তার সঙ্গে থাকে না গাড়িবহর কিংবা ব্যাপক কর্মী-সমর্থকের ভিড়। নীরবে-নিভৃতে নিজ এলাকা জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যাওয়া-আসা তার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর -৪ (সরিষাবাড়ী) আসন থেকে সংসদ সদস্য হওয়ার পর এলাকায় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জনে সক্ষম হয়েছিলেন মুরাদ। তবে প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়ে। সম্প্রতি বিভিন্ন বিতর্কিত বক্তব্য ও ফোনালাপ ফাঁসের পর মুরাদকে মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সব ইউনিটের পদ থেকে অব্যাহতি দেয় আওয়ামী লীগ। তার ওই সব বক্তব্যে সরিষাবাড়ী উপজেলার জনগণ বিব্রত বলে জানান দলের নেতাকর্মীরা।

মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারানোর পর থেকে ডা. মুরাদ হাসানের কাছ থেকে পুরোপুরি দূরে সরে যান আওয়ামী লীগের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। তবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তার এখনও সুসম্পর্ক আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, জামালপুর আওয়ামী লীগের কোনো দলীয় অনুষ্ঠানে ডাকা হয় না ডা. মুরাদ হাসানকে। তবে সংসদ সদস্য পদে বহাল থাকায় শুধুমাত্র সরকারি অনুষ্ঠানগুলোতে প্রধান অতিথি হিসেবে ডাক পান তিনি। এসব অনুষ্ঠানে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র প্রমুখ উপস্থিত থাকলেও তাদের সঙ্গে খুব একটা কথা হয় না ডা. মুরাদের। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ শেষে নিজের মতো করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন তিনি।

- বিজ্ঞাপন -

স্থানীয়রা আরও জানান, এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম, সরকারি স্থাপনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, দরিদ্রদের সহায়তা ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে ডা. মুরাদ হাসানকে দেখা যায়। তবে তার সঙ্গে দলীয় কোনো নেতা থাকেন না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনো কাজ থাকলে ডা. মুরাদ হাসান ঢাকা থেকে সরিষাবাড়ী এসে দৌলতপুর গ্রামে পৈতৃক বাড়িতেই থাকেন। অনুষ্ঠান শেষ হলেই তিনি ঢাকার পথে রওনা হন। দলীয় পদ হারানোর পর থেকে ডা. মুরাদ উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসেও যান না।

এলাকায় নিজস্ব কিছু অনুসারী ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে আজকাল মুরাদ হাসানের ওঠাবসাও নেই। সম্পৃক্ততা নেই জনগণের সঙ্গেও।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থকদের চাওয়া, বির্তকিত এই ব্যক্তি যাতে আর যেন কখনোই সরিষাবাড়ীর মাটিতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারেন। তারা মনে করেন ডা. মুরাদ হাসানের কারণে দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়েছে। তার নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে সরকারকেও বিব্রতকর অবস্থায় পরতে হয়েছে।

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক বলেন, “সরকারি সফরে ডা. মুরাদ এলাকায় এলেও বাড়ি থেকে খুব একটা বের হন না। এখানে আসার পর তার মায়ের কাছে ৭-৮ দিন থেকে আবারও ঢাকায় ফিরে যান তিনি। আগের চেয়ে তার আচরণ এখন অনেক নমনীয়।”

- বিজ্ঞাপন -

ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেন, “যেহেতু ডা. মুরাদ হাসান আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই, তাই আমাদের সঙ্গেও তার কোনো সম্পর্ক নেই। তার কোনো ব্যাপারে আমাদেরও মাথাব্যথা নেই।”

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।

তার ব্যক্তিগত সহকারী জাহিদ নাইমের মোবাইল ফোনে ফোন করা হলে বিপরীত প্রান্ত থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

- বিজ্ঞাপন -

গত বছরের ডিসেম্বরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক সাক্ষাৎকারে নারীদের প্রতি অসম্মানজনক মন্তব্যের জন্য বিভিন্ন মহলে সমালোচনার মুখে পড়েন মুরাদ হাসান। তার অশালীন মন্তব্য সম্বলিত বেশ কয়েকটি অডিও এবং ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।

এছাড়া অভিনেতা ইমন ও অভিনেত্রী মাহিয়া মাহির সঙ্গে মুরাদের দুই বছর আগের একটি ফোনালাপ ওই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেই অডিও ক্লিপে তিনি অভিনেত্রীকে “অপমানজনক মন্তব্য”, হুমকি এবং অশালীন প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

নারীবিদ্বেষী মন্তব্যের জেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

এরপর তিনি দেশ ছেড়ে কানাডায় পালানোর চেষ্টা করেন। তবে দেশটির পুলিশ তাকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঠিয়ে দেয়। সেখানেও ঢুকতে ব্যর্থ হয়ে ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসেন তিনি।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!