বিশ্বব্যাপী যতই মন্দা বা সংকট আসুক দেশে খাদ্য ঘাটতি হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, করোনা মহামারি বা যুদ্ধ— কোনো সংকটই বাঙালিকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের নাগরিক সংবর্ধনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আবুধাবি সফররত সরকারপ্রধান তার আবাসস্থল থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। আজকে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ শুনলে সবাই একটা মর্যাদার চোখে দেখে। সবাই সমীহ করে। বাংলাদেশ আবার তার হারানো গৌরব ফিরে পেতে শুরু করেছে। এটা ধরে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের সবকিছুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে, কারও মুখাপেক্ষী হয়ে যেন চলতে না হয়।’
‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এ বাংলাদেশকে আর কখনো কেউ পেছনে টানতে পারবে না। একটা কালো অধ্যায় ৭৫- এর পর ছিল, এই কালোমেঘ কেটে গেছে। এখন আমরা জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’
এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্টের ঘটনায় আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা আমাদের পাসপোর্টটা পর্যন্ত আটকে রেখেছিল। প্রবাসে রিফিউজি হিসেবে আমাদের থাকতে হয়েছে। একদিকে পরিবারের শোক, অন্যদিকে এই কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেদের পরিচয়টা পর্যন্ত দিতে পারিনি।
এ সংবর্ধনায় রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তেলের দাম বৃদ্ধিসহ যতই সংকট আসুক না কেন, বাংলাদেশ তা মোকাবেলা করতে পারবে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান করেছিলাম, আমাদের মাটি আছে, যে যা পারেন ফসল ফলান। এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে। আমি আবারও বলবো, যারা প্রবাসে আছেন, তারা পরিবারের মানুষদের বলবেন এক ইঞ্চি জমিও যেন খালি না রাখে। কিছু না কিছু যেন আবাদ করে। তাহলে বিশ্বব্যাপী যতই মন্দাবস্থা আসুক, খাদ্য ঘাটতি হলেও বাংলাদেশের মানুষের অসুবিধা হবে না।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আবুধাবি থেকে বক্তব্য রাখেন আইয়ুব খান, দুবাই কনস্যুলেট প্রান্ত থেকে মিলন হাওলাদার ও বাংলাদেশ ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্থি রাণী দাস। তারা বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবি ও সুযোগ-সুবিধার তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানান।
এর আগে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রাদেশিক শহর রাস আল খাইমার বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
এ সময় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার দেশে-বিদেশে বাংলা ভাষার উন্নয়নে দৃঢ়ভাবে কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে। যে সমস্ত অঞ্চলে প্রবাসীরা রয়েছেন, প্রবাসে পরিবারসহ বসরাস করছেন অনেক ব্যবসায়ী। সেখানে তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার সুবিধার জন্য বাংলাদেশি স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা বহুদিন ধরে প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলাম। স্কুলগুলোর উন্নয়নের জন্য কিছু কিছু জায়গায় আমরা সহযোগিতা দিয়েছি।’