বরিশালে ক্লাস বন্ধ রেখে স্কুলের মাঠে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকার মোফাজ্জেল হোসেন খান বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মোফাজ্জেল হোসেন খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রায় দেড় হাজার মানুষের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়।
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, স্কুলের মাঠে বিয়ের অনুষ্ঠানের কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি।
জানা গেছে, বরিশাল পোর্ট রোড পাইকারি মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ইয়ার হোসেন সিকদাদের মেয়ে সাবরিনা আক্তার সুমির সঙ্গে পশ্চিম চরহোগলা এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে বিকাশ আহম্মেদ বাপ্পীর বিয়ে ঠিক হয়। এই বিয়ের অনুষ্ঠানই ওই দুই স্কুলের মাঠে করা হয়।
দুপুরে স্কুলের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল প্যান্ডেল, সাউন্ড বক্সের উচ্চশব্দ আর রান্না শেষে বাবুর্চিদের বিশ্রাম নেয়ার চিত্র। কয়েকটি ক্লাসরুমে করা হয়েছে খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা।
এ সময় নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ‘অনুষ্ঠানের জন্য স্কুলের শিক্ষার্থীদের তরিঘড়ি ছুটি দেয়া হয়েছে। প্রভাব খাটিয়ে স্কুলের মাঠে এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন উদ্বেগজনক।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছে, সকালেই শিক্ষকরা তাদের বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছেন।
ইয়ার হোসেন সিকদার বলেন, ‘ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি নিয়েই বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।’
এ বিষয়ে মোফাজ্জেল হোসেন খান বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাজী হারুন অর রশিদ বলেন, ‘সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরাও কিছু বলিনি অনুষ্ঠানের আয়োজন করায়।’
মোফাজ্জেল হোসেন খান বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আশরাফুজ্জামান খান রনি বলেন, ‘মেয়ের পরিবার গরিব হওয়ায় আমরা অনুমতি দিয়েছি বিয়ের অনুষ্ঠান করার। তবে ক্লাস পুরোপুরি বন্ধ করা হয়নি, সকালে তিনটা ক্লাস হয়েছে।’
এ ঘটনায় বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ মজুমদার বলেন, ‘স্কুলের মাঠে বিয়ের অনুষ্ঠান করতে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল কিন্তু আমরা অনুমতি দিইনি।’
বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘স্কুল চলাকালীন মাঠে বিয়ের আয়োজন করা আইনের পরিপন্থি। খোঁজ নিয়ে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সোহেল মারুফ বলেন, ‘পাঠদান বন্ধ রেখে বিয়ের অনুষ্ঠান করা অপরাধ। খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করব।’