ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের নবব দিন চলছে আজ শনিবার। এ কয়দিনে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি এলাকা দখলে নিলেও বড় ধরনের হতাহতের মধ্যে পড়েছে রুশ বাহিনী। সাধারণ সেনা সদস্যদের পাশাপাশি অন্তত তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্রাণ গেছে ইউক্রেনে। শত্রুপক্ষের খুব কাছাকাছি যাওয়ার পর ইউক্রেনীয় স্নাইপারের গুলিতে অন্তত তিনজন অধিনায়ক নিহত হয়েছেন বলে পশ্চিমা দেশের কর্মকর্তারা বলছেন। খবর বিবিসি।
পশ্চিমা কর্মকর্তারাদের উদ্ধৃত করে বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক সংবাদদাতা গর্ডন কোরেরা জানাচ্ছেন, রুশ ৩১তম কম্বাইন্ড আর্মস আর্মির উপপ্রধান এক স্নাইপারের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
এছাড়াও একজন ডিভিশনাল কমান্ডার এবং রেজিমেন্টাল কমান্ডারও নিহত হয়েছেন।
কর্মকর্তা বলছেন, রুশ বাহিনীর কোনো কোনো অধিনায়ক নিজেদের দক্ষতা দেখাতে সৈন্য নিয়ে রণক্ষেত্রের অনেকখানি সামনে চলে গিয়েছেন। তাদের লক্ষ্য আরও বেশি ইউক্রেনিয়ান এলাকা দখল করা। তারা নিজেরা ব্যক্তিগতভাবে সম্মুখভাগে চলে যাওয়ার পর অনেকেই বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়েছেন। অন্তত তিনজন স্নাইপারের সহজ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন।
এদিকে রুশ অগ্রগামী বাহিনী ঠিক মতো বিমান সহায়তা পাচ্ছেন না বলেও মনে করছেন পশ্চিমা সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। যার ফলে সমূহ বিপদের আশঙ্কা রয়েছে তাদের।
কর্মকর্তা বলছেন, ইউক্রেনে রুশ স্থলবাহিনীকে কয়েকটি বড় দলে পাঠানো হয়েছে। দলগুলোর কয়েকটিকে শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষায় রাশিয়ার বিমানবাহিনীর নজরদারি দেখা যায়নি। এর মধ্যে আবার তুরস্কের ড্রোন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ট্যাংকবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পাওয়ায় শক্তি বেড়েছে ইউক্রেনের। ফলে অরক্ষিত রুশ সেনারা আক্রমণের ঝুঁকিতে পড়ছেন।
সিরিয়ার অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও ‘নির্ভুলতা, নমনীয়তা ও আন্তঃকার্যক্ষমতার’ দিক দিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর বিমানবাহিনীর চেয়ে রুশ বিমানবাহিনী অনেক পিছিয়ে রয়েছে বলে মত দিয়েছেন ফরাসি সেনা কর্মকর্তা মিশেল গোয়া।
এদিকে ধীর গতিতে হলেও ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চল, শহর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় রুশ সেনাদের নিয়ন্ত্রণ ক্রমশ বিস্তৃত হচ্ছে। শুক্রবার দেশটির দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলীয় এনারহোদার শহরের জাপোরঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রুশ বাহিনী। এর বাইরে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের খেরশন ও নোভা কাখোভকা, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় মালিতোপোল এবং পূর্বাঞ্চলীয় বারদিয়ানস্ক শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন রুশ সেনারা। ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ, বন্দরনগরী মারিওপোল এবং উত্তরাঞ্চলের চেরনিহিভ ও সুমি শহর ঘিরে গোলা নিক্ষেপ করছে রুশ বাহিনী।