মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলা ও অভিযোগ গঠনের আদেশের কার্যক্রম তিনমাসের জন্য স্থগিত করা হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
শুক্রবার (৪ মার্চ) সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আগামী ৬ মার্চ এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গত ১ মার্চ মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলা ও অভিযোগ গঠনের আদেশের কার্যক্রম তিনমাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার মামলা বাতিলের বিষয়ে রুল জারি করেন আদালত। মামলার বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
পরীমণির আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না ও সৈয়দা নাসরিন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানীতে পরীমণির বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। পরে তাকে গুলশান থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। গত ৩১ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন পরীমণির জামিন মঞ্জুর করেন। এ মামলায় ৪ অক্টোবর পরীমণিসহ তিন জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযোগপত্র দাখিলের পর ১০ অক্টোবর পরীমণি ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির হয়ে পুনরায় জামিন নেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পরীমণির বাসা থেকে জব্দ করা মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সিআইডিকে জানানো হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমণির নামে মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। গত বছরের ৩০ জুন ওই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। পরীমণি এ মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পরীমণি তার গাড়িটি মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন।
পরে একই মামলায় গত ৫ জানুয়ারি চিত্রনায়িকা পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম অভিযোগ গঠন করেন। একইসঙ্গে আদালত পরীমণিসহ তিনজনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন নামঞ্জুর করেন। মামলার অপর দুই আসামি হলেন, আশরাফুল ইসলাম দীপু ও কবির হোসেন।
এরপর গত ৩০ জানুয়ারি মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলা ও একই মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে চিত্রনায়িকা পরীমণি হাইকোর্টে আবেদন জানান।