দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতির বিষয়ে আইনগত ব্যাখ্যা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত শুনানিতে অংশ নিয়ে এই আদেশ দেন।
আগামী ৮ মার্চ এ বিষয়টি ফের শুনানির জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায় আসবে। এই সময়ের মধ্যে দুদক ও রিটকারীপক্ষকে লিখিতভাবে আইনগত ব্যাখ্যা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির।
এর আগে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করা হয় শরীফ উদ্দিনকে। এরপরই তোলপাড় শুরু হয় দেশজুড়ে। এক সংবাদ সম্মেলনে দুদকের পক্ষ থেকে শরীফের বিরুদ্ধে ১৩টি বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হলেও প্রমাণ করতে পারেনি দুদক।
শরীফ উদ্দিনও দুদকের আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রসিডিউরাল মিসটেক হতে পারে, কিন্তু চাকরি যাওয়ার মতো কোনও অন্যায় তিনি করেননি।
এর মধ্যে ২২ ফেব্রুয়ারি শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনা হয়। তখন হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের আইন অনুযায়ী আদালতে রিট দায়েরর পরামর্শ দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় পরদিন শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে ১০ জন আইনজীবী একটি রিট দায়ের করেন।
প্রসঙ্গত, শরীফ উদ্দিন, দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় পটুয়াখালীতে উপ-সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার আগে সাড়ে তিন বছর ছিলেন চট্টগ্রামে। গত বছরের জুন মাসে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান ও ভোটর তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক, সেসব মামলার বাদী ছিলেন শরীফ।
পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা সনদ দেওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেও তিনি আলোচিত হন।
অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) বিভিন্ন অভিযোগ নিয়েও তদন্ত করেন শরীফ।