চট্টগ্রামে মাতৃভাষার উপর আন্তর্জাতিক সেমিনারে নরওয়ে থেকে আগত নরওয়ের উন্নয়নমূলক সংস্থা ‘কমন ইমিগ্রেশন কাউন্সিল’র সম্পাদক ও নরওয়ে থেকে প্রকাশিত অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম একমাত্র বাংলা নিউজ পোর্টাল সাময়িকী ডটকমের সম্পাদক কবি ভায়লেট হালদার প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেছেন, মাতৃভাষা সকল মানুষের জন্য প্রিয়, শ্রদ্ধা ও অতি পবিত্র। মাতৃভাষার প্রতি আমাদের সকলের দরদ ও সম্মান থাকা খুবই প্রয়োজন।
এসময় তিনি বলেন, বায়ান্ন সালে বাংলা ভাষা রক্ষার জন্য মাতৃভাষা আন্দোলন ও শহীদদের আত্মদানের ইতিহাস সারা পৃথিবীতে পরিচিতি রয়েছে। ঘটনাবহুল এই ইতিহাসটিকে এখন সমগ্র বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারি পালিত হচ্ছে। এটি বাঙালির জন্য গৌরবের বিষয়।
কবি ভায়লেট হালদার আরো বলেছেন, স্ব-স্ব দেশের নবপ্রজন্মের অসচেতনতার কারণে পৃথিবীর অনেক মাতৃভাষা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আধুনিকতার নামে তারা ভিনদেশীয় ভাষাচর্চাকে প্রাধান্য দিচ্ছে। আমাদের দরকার ভিনদেশীয় ভাষা শেখা ও আয়ত্ত করা; কিন্তু নিজ মাতৃভাষা বিসর্জন দিয়ে নয়। তিনি মাতৃভাষার প্রতি সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নবপ্রজন্মকে মাতৃভাষা চর্চায় ধাবিত করার জন্য সেমিনারে আহ্বান জানান।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পশ্চিমবঙ্গ ভারত থেকে আগত বিশিষ্ট কবি ও সাময়িকী ডটকমের সাহিত্য সম্পাদক লিটন রাকিব বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবস্থান বন্ধুত্বের। ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রীময় সম্পর্ক সকলের জন্য সম্মানের। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষা চর্চা আরো দ্রুততার সহিত এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। না হয় বাংলা ভাষা চর্চা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে। সে জন্য মাতৃভাষা চর্চায় সবাইকে পবিত্র দায়িত্ব পালন করতে হবে।
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ রবিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি’র মোড়স্থ দি পেনিনসুলা চিটাগাং-এর অডিটরিয়ামে চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র (সিএইচআরসি) এর আয়োজনে আন্তর্জাতিক এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপদেষ্টা প্রাবন্ধিক ব্যাংকার দুলাল কান্তি বড়ুয়া।
উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মানবতাবাদী অধ্যাপক স্মৃতি বড়ুয়া। আন্তর্জাতিক এই সেমিনারে “মাতৃভাষা ও নবপ্রজন্মের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস” বিষয়ক একটি লিখিত প্রবন্ধ পাঠ করেন চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি ইতিহাসবেত্তা সোহেল মো. ফখরুদ-দীন।
সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ও গবেষক ড. অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সানাউল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশলী শংকর বড়ুয়া, প্রফেসর ড. অর্থদর্শী বড়ুয়া, অধ্যাপক মিয়া মুহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী, ভাষা আন্দোলন গবেষক ডা. মআআ মুক্তাদীর, সংগীতশিল্পী শহীদ ফারুকী, অধ্যক্ষ রিদুয়ানুল হক,প্রাক্তন এডিসি অরবিন্দ বড়ুয়া।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শেখ আরিফুর রহমান, ভাস্কর শিল্পী ডিকে দাশ মামুন, প্রাবন্ধিক নাজমুল হক শামীম, কবি অরূপ কুমার বড়ুয়া, লায়ন উজ্জ্বল কান্তি বড়ুয়া, প্রাবন্ধিক এ কে জাহেদ চৌধুরী, অধ্যাপক মুছাকলিমুল্লাহ,সাফাত বিন সানাউল্লাহ, পাপড়ি বড়ুয়া,শংকর বড়ুয়া, সৈয়দ শাহাজাহান আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।