কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে পৌঁছেছে আরও এক হাজার ৬৫৫ রোহিঙ্গা। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় নৌবাহিনীর ছয়টি জাহাজে রোহিঙ্গারা ভাসানচরে পৌঁছায়। এ নিয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ কেন্দ্রে রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়ালো ২২ হাজার ৬০৪ জন।
ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপ-সচিব) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এক হাজার ৬৫৫ রোহিঙ্গাকে জাহাজ থেকে নামানোর পর নৌবাহিনীর পল্টুন সংলগ্ন হ্যালিপ্যাডে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গাড়িযোগে নির্ধারিত ক্লাস্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ৮৫ জন রোহিঙ্গা কক্সবাজার থেকে বেড়াতে এসেছেন এবং ১৫৫ জন ভাসানচর থেকে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিলেন। তারাও একই জাহাজে ফিরেছেন ভাসানচরে।
এর আগে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে এক হাজার ৬৪২ জন, ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ধাপে এক হাজার ৮০৪ জন, ২০২১ সালের ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপে তিন হাজার ২৪২ জন, ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে তিন হাজার ১৮ জন, ৩ ও ৪ মার্চ পঞ্চম ধাপে চার হাজার ২১ জন, ১ ও ২ এপ্রিল ৬ষ্ঠ ধাপে চার হাজার ৩৭২ জন, ২৫ নভেম্বর ৭ম ধাপে ৩৭৯ জন, ১৮ ডিসেম্বর অষ্টম ধাপে ৫৫২ জন, ৬ জানুয়ারি ৯ম ধাপে ৭০৫ জন এবং ৩১ জানুয়ারি দশম ধাপে এক হাজার ২৮৭ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। আজ ১১তম ধাপে এক হাজার ৬৫৫ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে গেলো।
এছাড়া গত বছর মে মাসে সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে ৩০৬ রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের সেনাদের হাত থেকে প্রাণে বাঁচাতে রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা উখিয়া-টেকনাফ শরণার্থী শিবিরগুলোতে বসবাস করছেন। শরণার্থীদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার। সে লক্ষ্যে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী করে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়।