সাবেক হাই কমিশনার মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে মালয়েশিয়ার হাইকোর্ট। খায়রুজ্জামানের স্ত্রী রিটা রহমানের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়ার হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন এই আদেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।
মঙ্গলবার ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, খায়রুজ্জামানের জন্য তার স্ত্রী আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে ‘হেবিয়াস করপাস রিট’ করেছেন। এর শুনানি আগামী ২০ মে পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন বিচারক মোহাম্মদ জাইনি মাজলান। এসময় পর্যন্ত স্থগিতাদেশ থাকবে।
‘হেবিয়াস করপাস রিট’ হচ্ছে কাউকে ‘বেআইনিভাবে’ আটক করার অভিযোগ উঠলে তাকে আদালতের সামনে হাজির করার জন্য এ ধরনের রিট মামলা হয়।
খায়রুজ্জামানের আইনজীবীরা আদালতে বলেন, তিনি (খায়রুজ্জামান) মালয়েশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ছিলেন। তার নামে আন্তর্জাতিক শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা-ইউএনএইচসিআরের কার্ডও ছিল। তিনি অভিবাসন আইন ‘ভঙ্গ করেননি’, ফলে তাকে আটকে রাখা ‘বেআইনি’। তার বৈধ ভ্রমণ নথিপত্র আছে। তিনি মালয়েশিয়ায় কোনো কাজ করছিলেন না। তিনি বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। তাকে বহিষ্কার করার অধিকার মালয়েশিয়ার নেই।
খায়রুজ্জামানকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের ক্ষেত্রে গত শুক্রবার সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের একটি আদালত। এখন দেশটির হাইকোর্ট তাকে হস্তান্তরের ওপর স্থগিতাদেশ দিলেন।
আদালতের স্থগিতাদেশের পরও গতবছর মিয়ানমারের কয়েকজন নাগরিককে মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানোর ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে আইনজীবী এডমুন্ড বন বলেন, খায়রুজ্জামানের ক্ষেত্রে যেন তেমনটা না হয়।
বিচারক তখন বলেন, “আদালতের আদেশের পরও তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে- এমন কিছু আমি শুনতে চাই না। আমি আশা করি, ইমিগ্রেশন বিভাগ বিষয়গুলো নিজেদের কাঁধে তুলে নেবে না।”
হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে ইমিগ্রেশন বিভাগের আইনজীবী উওং সিউ মুন বলেছেন, অন্তবর্তীকালীন এই স্থগিতাদেশের বিষয়ে তিনি অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে যোগাযোগ করবেন।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর প্রদেশের আমপাং এলাকার বাসা থেকে খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে দেশটির অভিবাসন পুলিশ।
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান ১৯৭৫ সালের জেল হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন এবং পরে খালাস পান। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে তিনি মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার নিযুক্ত হন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তাকে দেশে ফিরতে বলা হয়। তখন থেকেই তিনি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের শরণার্থী কার্ড নিয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন।