এক লাখ বিছানার চাদর ও বালিশের কভার কেনার জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) তিন কর্মকর্তার নয় দিনের জার্মানি সফরের খবর সামনে এলে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। তবে এবার পুলিশ সদর দপ্তরের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “বিছানার চাদর কেনা হচ্ছে দেশীয় ঠিকাদারের মাধ্যমেই, তবে রঙটা আসবে জার্মানি থেকে। সেজন্য ফ্যাক্টরি একসেপটেন্স টেস্ট করতে এই সফরের আয়োজন।”
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. কামরুজ্জামানের ভাষ্য, “জার্মানি থেকে বেডশিট কেনার বিষয়টি ঠিক নয়। এক লাখ বেডশিট ও পিলো কাভারের অর্ডারটা পেয়েছে দেশীয় একটা কোম্পানি। গত অক্টোবরে টেন্ডারের সময় বলা হয়েছিল, ডাই (রং) হিসেবে তারা ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড কেমিকেল ব্যবহার করবে। দেশীয় সেই কোম্পানি ডাই নেবে জার্মান একটা কোম্পানি থেকে। ফ্যাক্টরি একসেপটেন্স টেস্ট চলমান একটা প্রক্রিয়া। এটার জন্যই আইজিপি মহোদয় জার্মানি যাবেন বলে মনস্থির করেছেন। এই সফরের খরচ বহন করছে দেশীয় ঠিকাদার কোম্পানি। পরিদর্শন দলের সঙ্গে ঠিকাদার কোম্পানির বিশেষজ্ঞরাও থাকবেন। পুলিশের সাধারণ সদস্যরাই এসব বেডশিট ও পিলো কাভার ব্যবহার করবেন।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ৭ ফেব্রুয়ারি ওই সফরের বিষয়ে একটি আদেশ জারি করে। তারপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। ওই আদেশে বলা হয়েছে, আইজিপি বেনজীর আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মো. ফিরোজ উদ্দীন খলিফা এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাসুদ আলম ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সুবিধাজনক সময়ে ৯ দিনের সফরে জার্মানি যাবেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম মজুমদারের সই করা ওই আদেশে বলা হয়, এক লাখ বিছানার চাদর ও বালিশের কভারের (ডাবল) শিপমেন্টের জন্য “ফ্যাক্টরি একসেপটেন্স টেস্টে” অংশ নিতে এই তিন কর্মকর্তার এই সফর। অফিস আদেশের শর্তাবলির মধ্যে রয়েছে, ওই পরিদর্শনের সব খরচ “আয়োজক” বহন করবে এবং এর সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের কোনো আর্থিক যোগ থাকবে না।
তবে পুলিশের জন্য বিছানার চাদর “কিনতে” জার্মানযাত্রার এই খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেন পোশাক রপ্তানিকারকরাও। বাংলাদেশের বস্ত্র যেখানে ইউরোপ, আমেরিকাসহ সারা পৃথিবীতে যাচ্ছে, সেখানে জার্মানি থেকে এই কেনাকাটা তাদের বোধগম্য নয়।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শাহাদাত হোসেন বলেন, “জার্মানি বা ইউরোপ থেকে কেমিকেলটা (রং) আসে। হয়ত সেরকম কিছু হচ্ছে এই অর্ডারের ক্ষেত্রেও। তবে সেক্ষেত্রে সরকারি চিঠির (আদেশের) ভাষাটা কেন ওরকম- তা আমি জানি না।”