বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) “দ্যা ওয়াশিংটন পোস্ট” ও “হিউম্যান রাইটস ওয়াচ” প্রকাশিত এক জরিপ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর পুলিশের হাতে ১ হাজার ৫৫ জন মার্কিন নাগরিক মারা গেছেন। যেখানে, ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২১ জন ও ২০১৯ সালে ছিল ৯৯৯ জন।
২০১৫ সালে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট পুলিশের গুলি চালানো ওপর ট্র্যাকিং করা শুরু করার পর থেকে এমন চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে এসেছে।
জানা গেছে, এসব মৃত্যুর কারণ হিসেবে পুলিশের গুলি, নির্যাতন ও পুলিশের কুকুরের কামড় অন্যতম।
রেকর্ড সংখ্যক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটার পরও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ২০২১ সালে পুলিশের হাতে নিহতের হার মোট প্রত্যাশিত সীমার মধ্যে আছে।
তথ্য বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, পুলিশ গত সাত বছরে প্রায় প্রতি বছরেই অন্তত ১ হাজার জনকে গুলি করেছে। এর মধ্যে, ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ ৯৫৮ জনকে গুলি করা হয়েছে।
বেসরকারি অপরাধবিদ ও তথ্য বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু হুইলার বলেন, “২০২১ সালে পুলিশের প্রাণঘাতী গুলির আঘাতে অন্তত ৬০ জন মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। তাদের হামলার তথ্য রেকর্ড শুরু করার পর থেকেও আচরণে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তিত হয়নি।”
২০২০ সালে পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর রাজ্য আইনসভায় ৪০০টিরও বেশি বিল পেশ করা হয়েছিল। পুলিশ বিভাগগুলো সঙ্কটে থাকা সদস্যদের প্রতিক্রিয়া জানাতে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও নিয়েছে। শহরগুলোয় বেসামরিক পর্যালোচনা বোর্ডও স্থাপন করা হয়। কিন্তু, এর কোনোটিই গত বছর কর্মকর্তাদের হাতে গুলিবিদ্ধ ও নিহত মানুষের সংখ্যা কমাতে পারেনি।
তবে, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক এবং অপরাধবিজ্ঞানী ফ্রাঙ্কলিন জিমরিং বলেন, “২০২০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মারাত্মক গুলিবর্ষণের সংখ্যা বৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে নগণ্য।”
জিমরিং বলেন, “নতুন প্রণীত নীতির পরিসংখ্যানগতভাবে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য আনতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।”
দ্য পোস্টের তথ্য অনুসারে, গত বছর পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ এবং নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫%-ই ছিল সশস্ত্র। আর তাদের মধ্যে ৯৪% পুরুষ এবং ১৪% মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০২১ সালে নিহত ১ হাজার ৫৫ জনের মধ্যে ১% ছিল কিশোর।