বাংলাদেশে ক্যানসারে আক্রান্তদের নিয়ে আক্ষেপ করে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, প্রতিদিন কতো মানুষ ক্যানসারে মারা যায় সেই হিসাব লোকজন রাখে না। ক্যানসারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, দেশে প্রতি বছর ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয় প্রায় এক লাখ। অর্থাৎ এই হিসাবে রোজ মারা যায় ২৭৩ জন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ক্যানসার ইনস্টিটিউটে জাতীয় ক্যানসার দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অসংক্রামক রোগ সারা পৃথিবীতে, আমাদের দেশেও বাড়ছে। জীবনযাত্রা উন্নয়নের পাশাপাশি এসব রোগও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে ক্যানসার অন্যতম। বাংলাদেশে ৬৭ শতাংশ মানুষ ননকমিউনিকেবল ডিজিজে মারা যায়।’
দেশে ক্যানসার রোগের পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ২০ লাখ ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী আছেন। প্রতি বছর আরও প্রায় এক-দেড় লাখ মানুষ যোগ হয়। মৃত্যুও হয় প্রায় লাখের কাছে। অর্থাৎ এক লাখ লোক যদি মৃত্যুবরণ করে বছরে, তাহলে রোজ মারা যায় ২৭৩ জন। সে খবর আমাদের নেই। অথচ করোনার মৃত্যুটাকে আমরা সবাই দেখে থাকি। রোজ জানানো হচ্ছে বলে আমরা এটা জানতে পারি। ক্যানসারে কতো লোক মারা যায় সেই হিসাবটা খুব একটা লোকে রাখে না।’
ক্যানসারের বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেখতে হবে ক্যানসারের কারণটা কী। আমরা কীভাবে প্রতিরোধ করতে পারি। ঢাকার বাতাস অন্যান্য দেশের তুলনায় অত ভালো না। যার ফলে আমাদের লাঙ ক্যানসার হয়, গলায় ক্যানসার হয়। বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার এই দূষিত বাতাসের কারণে হয়। নদী-নালায় শিল্পের বর্জ্য ফেলা হয়। বুড়িগঙ্গার অবস্থা কী রকম। এ সমস্ত নদীর পানি যদি ব্যবহার করা হয়, তাহলে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার হতে পারে। আমরা খাবার যেটা খাই, সেখানেই যদি ভেজাল থাকে; রঙ, ফরমালিন মেশানো হয়। যার কারণে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাকস্থলীর ক্যানসারও বাংলাদেশে অনেক হয়ে থাকে। আমাদের দেশে খাদ্য উৎপাদনের সময় কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। সেটার কারণেও অনেক লোক ক্যানসারে আক্রান্ত হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে আয়ু বাড়ছে। এখন লোকে ৭০-৮০ বছর বাঁচে, সে কারণেও কিন্তু তারা ক্যানসারের ঝুঁকিতে পড়ে। প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে চিকিৎসা দেওয়া যায়। অনেক ক্যানসার আছে ভালো চিকিৎসা দিলে ভালো হয়ে যায়। সবার জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করা দরকার। শুধু ঢাকার লোক বা ধনাঢ্য ব্যক্তি ক্যানসার চিকিৎসা ভালো পাবে, অন্যরা পাবে না—এই অবস্থা আমরা চলতে দিতে পারি না। তাই আমরা ক্যানসার চিকিৎসার ব্যাপ্তি বাড়ানোর চেষ্টা করেছি।