অন্যের স্ত্রীকে ডিভোর্স না নিয়ে বিয়ের অভিযোগে করা মামলায় ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর ফলে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। এছাড়াও মামলা থেকে তামিমার মা সুমি আক্তারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার অ্যাডিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
গত ২৪ জানুয়ারি ঢাকার অ্যাডিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। সে দিন নাসির-তামিমার আইনজীবী মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করতে শুনানি করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক এ বিষয়ে আদেশের জন্য ৯ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
এর আগে, গেল বছরের ৩১ অক্টোবর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে এই মামলার আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় তা বদলির আদেশ দেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারক তাদের আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য ৩১ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ডিভোর্স পেপার ছাড়াই অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে করা মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীমের আদালতে তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
রাকিবের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত জাহান ওই সময় বলেছিলেন, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাদীর (রাকিব হাসান) সঙ্গে ১ নম্বর আসামি তামিমা সুলতানার ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক ৩ লাখ এক টাকা দেনমোহরে বিয়ে এবং রেজিস্ট্রি হয়। বিয়ের পর থেকে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করতে থাকেন। তাদের তোবা হাসান নামে এক মেয়ে রয়েছে। যার বর্তমান বয়স ৮ বছর।
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, তামিমা পেশায় একজন কেবিন ক্রু। তিনি সৌদি এয়ারলাইন্সে কর্মরত রয়েছেন। চাকরির সুবাদে তিনি ২০২০ সালের ১০ মার্চ সৌদিতে গিয়েছিলেন। মহামারির কারণে জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হলে সেখানেই অবস্থান করেন। এ সময় ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রাকিবের সঙ্গে তার যোগাযোগ হতো।
মামলায় বলা হয়, ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার সঙ্গে ২নং আসামির (ক্রিকেটার নাসির) কথিত বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা বাদীর নজরে আসে। বাদী এই ধরনের ছবি দেখে হতবাক হয়ে যান। পরবর্তীতে পত্রিকায় এই বিষয়ে সংবাদ দেখে তিনি ঘটনার বিষয় নিশ্চিত হন। এছাড়া তাদের গায়ে হলুদ ও বিয়ে পরবর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান যথাক্রমে ১৭ ও ২০ ফেব্রুয়ারি সম্পন্ন হয়। যা বিভিন্ন সংবাদে প্রকাশিত হয়।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, তামিমা বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকা অবস্থায় নাসিরের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। নাসির বাদীকে ফোন করে জানান যে সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত এবং তার নিকট তামিমা আছেন। বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় তামিমার নাসিরকে বিয়ে করা যা ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইনে সম্পূর্ণ অবৈধ। আসামিদের এরূপ অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে বাদী ও তার শিশু কন্যা মারাত্মকভাবে মানসিক বিপর্যস্ত হয়েছেন।