চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছিয়েছে প্রায় সাড়ে ২১ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ভারত, ব্রাজিল, রাশিয়া, ইতালি, স্পেন ও আর্জেন্টিনা। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪০ কোটি ২ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৭ লাখ ৮১ হাজার।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১ হাজার ৪৬০ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৭ লাখ ৮১ হাজার ২২১ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২১ লাখ ৪৬ হাজার ৪৬৫ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪ লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি ২ লাখ ৯৬ হাজার ৮৭ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ১২ হাজার ৭২৪ জন এবং মারা গেছেন ২৩১ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ১৪ লাখ ১১ হাজার ৪৬৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৯ হাজার ৭২৬ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৭ জন এবং মারা গেছেন ২ হাজার ৬৯৭ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৩৯ হাজার ৫২১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৯ লাখ ৩২ হাজার ৩৬৩ জন মারা গেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ১৭৪ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৮৩ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৬৭ লাখ ৭৬ হাজার ৬২০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৮৯৪ জনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ২৩০ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬৯ হাজার ৪৪১ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৪ কোটি ২৪ লাখ ৯ হাজার ৫২ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ৫ হাজার ৩০৮ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৯৮ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৪৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৬৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৭২১ জনের।
স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ হাজার ৮৩১ জন এবং মারা গেছেন ৩৬১ জন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ হাজার ৩৫৩ জন এবং মারা গেছেন ২৫৫ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ৯৬ জন এবং মারা গেছেন ২৪১ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৮৬৪ জন এবং মারা গেছেন ৩৯৩ জন।
এছাড়া গত একদিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬ হাজার ১৮৩ জন এবং মারা গেছেন ৩১৪ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৯ লাখ ৩২ হাজার ৮০৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫৮ হাজার ৬৭৭ জন মারা গেছেন। গত একদিনে কলম্বিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৭৩০ জন এবং মারা গেছেন ২০৫ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ আফ্রিকায় ২৬৮ জন, কানাডায় ১০৯ জন, আর্জেন্টিনায় ২৮৪ জন, গ্রিসে ১০৮ জন, পোল্যান্ডে ২৮৬ জন, হাঙ্গেরিতে ৯৪ জন, ইরানে ১১৪ জন, জাপানে ১২২ জন, রোমানিয়ায় ১৮৪ জন এবং ভিয়েতনামে ৯৭ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ২০৬ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৯ হাজার ৭৫২ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।