চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে প্রায় সাড়ে ১৮ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে রাশিয়ায়। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মেক্সিকো। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ইতালি, কলম্বিয়া ও ফিলিপাইন। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৯ কোটি ৫৮ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৭ লাখ ৫৮ হাজার।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ হাজার ৩৪১ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে প্রায় ২ হাজার। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৭ লাখ ৫৮ হাজার ৩৮২ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ২১ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ কোটি ৫৮ লাখ ২ হাজার ৬৪৮ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে রাশিয়ায়। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৬১ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ৮০ হাজার ৭১ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ২৮ লাখ ১০ হাজার ১১৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৪১৪ জনের।
অন্যদিকে ফ্রান্সে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৩৯ জন এবং মারা গেছেন ১২৯ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৩৭১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩২ হাজার ৫০৬ জন মারা গেছেন।
গত এক দিনে যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণ ও প্রাণহানি অনেকটা কমেছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ হাজার ৫৬১ জন এবং মারা গেছেন ৩৬৯ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭ কোটি ৮০ লাখ ১৭ হাজার ২৫২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৯ লাখ ২৬ হাজার ২৪ জন মারা গেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪২০ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬৩ হাজার ৩২৪ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৬৫ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৩২ হাজার ২৮৯ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৭ হাজার ৯৩৪ জন এবং মারা গেছেন ২০১ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৭ হাজার ২৯ জন এবং মারা গেছেন ২২৯ জন।
এছাড়া গত একদিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ হাজার ৯৫ জন এবং মারা গেছেন ৭৫ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩ হাজার ৩২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫৮ হাজার ৩১৮ জন মারা গেছেন। গত একদিনে কলম্বিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৩৫৬ জন এবং মারা গেছেন ২৩৯ জন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৪ হাজার ৪২৪ জন এবং মারা গেছেন ৩৪ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ১০ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৯ হাজার ৩৬৬ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজার ৮৫১ জন এবং মারা গেছেন ১০৯ জন।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৪ কোটি ২২ লাখ ৭১ হাজার ২০২ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ২ হাজার ৯০৫ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৮ জন, পোল্যান্ডে ১৯ জন, কানাডায় ৮৫ জন, আর্জেন্টিনায় ১০০ জন, গ্রিসে ৯৫ জন, পেরুতে ৯৩ জন, ফিলিপাইনে ৩১২ জন, জাপানে ১২৬ জন এবং ভিয়েতনামে ৬৩ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৫৮৮ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৯ হাজার ৪১৭ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।