বাংলাদেশের ঋতুবৈচিত্রে এখন চলছে মাঘ মাস। মাসটির মাঝামাঝিতে এসে শীতের তীব্রতা বেড়েছে দেশজুড়ে। বিশেষ করে শীত সবচেয়ে বেশি কাঁপুনি ধরিয়েছে উত্তরাঞ্চলে। জেঁকে বসা তীব্র শীতে উত্তরের জেলাগুলোতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সারা দেশে তাপমাত্রা অস্বাভাবিক মাত্রায় নেমে যাবে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা ৩-৪ ডিগ্রি কমবে। রাজশাহী বিভাগে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
উত্তরে কয়েকদিন ধরেই কনকনে শীত আর ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে। রংপুর অঞ্চলের ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাজশাহীতে শুক্রবার মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ার কথা। এ অবস্থায় তাপমাত্রা আরও নেমে যাবে এমন আশঙ্কা রয়েছে। সবমিলিয়ে অনেকটাই বিপর্যস্ত উত্তরের জনজীবন।
শুক্রবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় কুড়িগ্রামের রাজারহাটে, যা রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। রংপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, রংপুরে তাপমাত্রা ৮ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। শৈত্যপ্রবাহ আরও দুই-তিনদিন থাকতে পারে।
এদিকে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহে জবুথবু অবস্থা উত্তরাঞ্চলবাসীর। তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জীবনযাত্রা। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকে দিনের অর্ধেকটা সময়। সেই সঙ্গে হিমেল বাতাস। তবু বসে থাকার উপায় নেই দিনমজুর ও কৃষক-শ্রমিকদের। জীবিকার তাগিদে শীত-কুয়াশাকে উপেক্ষা করে যেতে হচ্ছে কাজে। ছিন্নমূল মানুষরাও পড়েছেন বিপাকে। খড়কুটো জ্বালিয়ে কোনো রকমে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা। নগরীতেও রিকশা-ভ্যান চালকরা একটু পর পর হোটেল কিংবা চায়ের দোকানে গিয়ে চুলায় হাত গরম করে নিচ্ছেন।
কুয়াশার কারণে সকাল থেকে সারা দিনে বিভিন্ন সড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। সন্ধ্যার পরপরই শহর ও গ্রামের হাটবাজারের মানুষের আনাগোনা কমে যাচ্ছে।
এদিকে তীব্র ঠাণ্ডায় হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি-জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। আক্রান্তরা চিকিৎসা নিতে ভিড় করছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে।