নির্বাচনকে সামনে রেখে লবিস্ট নিয়োগ করে যে টাকা খরচ হচ্ছে এই টাকার পাই পাই হিসাব আমরা আদায় করতে চাই। সেই টাকার পাই পাই হিসাব দিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত কত কোটি, কত শত কোটি টাকা তারা খরচ করেছে। এই তো বিএনপি’র চরিত্র।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশনের সমাপনি বক্তব্য ও রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচনকে সুষ্ঠভাবে করে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা এটা আওয়ামী লীগই দিয়েছে সব সময়। আওয়ামী লীগ মহজোট সকলে মিলে ২৩ দফা দিয়েছিলাম। মানুষের ভোটের অধিকার রক্ষা করা আমাদের কাজ, কেড়ে নেওয়া না। সেটা রক্ষা করেই যাচ্ছি এবং যাব। এই সততা নিয়ে নিষ্ঠার সাথে পরিকল্পিভাবে কাজ করছি বলেই আজকে বাংলাদেশ এতো উন্নত হয়েছে।
বিএনপির সমালোচনা করে সংসদ নেতা বলেন, পাঁচ বছর। ২০০১ থেকে যতদিন ক্ষমতায় ছিল জনগণের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করে সেই টাকা দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চক্রান্ত, কেন? যাদের কোন দেশপ্রেম নাই, জনগণের প্রতি যাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই, জনগণের প্রতি ভালবাসা নেই, জনগণের মঙ্গল যারা চায় না, তারাই পদ্মাসেতু বন্ধ করতে টাকা বন্ধ করার চেষ্টা করে। তারাই দেশের উন্নয়ন বন্ধ করতে চেষ্টা করে, তারাই বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেস্টা করে। এটা তো স্বাভাবিক। যে বাংলাদেশকে মনে করতো এটা একটা দেশ নাকি? আজকে সেই বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। মাত্র ১২ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে; এটা তো হিংসার ব্যাপার হবেই। এখানে আমরা নিজেদের ভাগ্য গড়তে আসি নাই, জনগণের ভাগ্য গড়তে এসেছি, সেটা আমরা করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, সব দিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এটাই যাদের পছন্দ না। যাদের মধ্যে কোনো দেশপ্রেম নাই, যাদের মধ্যে জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই, যারা শুধু লুটে খেতে পারে জনগণের সম্পদ। তারাই এদেশের সর্বনাশের জন্য লবিস্ট রাখে। আর অসত্য তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেস্টা করে। আমার জনগণের প্রতি বিশ্বাস আছে, আস্থা আছে ওসব কথায় তারা বিভ্রান্ত হবে না; এটা আমার বিশ্বাস।
র্যাবের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে বলেন, আমেরিকা আমাদের র্যাবের কিছু অফিসার তাদের উপর তারা স্যাংশন দিয়েছে। কাদের উপরে? আমাদের আইজিপি পুলিশ, তিনি তখন র্যাবের ডিজি ছিলেন। হলি আর্টিজানে যখন সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করে মানুষ হত্যা করে এবং সেই বিভৎস দৃশ্য তারা শুধু গুলি করে হত্যা করেনি, ছুড়ি দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে পর্যন্ত মানুষ মেরেছে। হত্যা করে সেই রেস্টুরেন্টে বসে ওখানে বাবুর্চিদের জিম্মি করে তাকে দিয়ে ফ্রিজ সব কিছু বের করে রান্না করেও খেয়েছে। কি রকম বিকৃত মনা তারা। এরপর জীবতদের উদ্ধার করার পদক্ষেপ গ্রহণ করি। সেই সময় আমেরিকার যিনি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে ছিলেন, তিনি একটা টুইট করেছিলেন যে হলি আর্টিজানে যে সন্ত্রাসী আক্রমণ করেছে সেটা বাংলাদেশ একা সমাধান করতে পারবে না। রোজার দিন ছিল সেহরীর সময় পর্যন্ত আমি বৈঠক করেছি সেনাপ্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, পুলিশ, র্যাব সবাইকে নিয়ে বসে মিটিং করেছি। কি করা হবে? কিভাবে ওখানে অপারেশন চালানো হবে। তার পুরো পরিকল্পনা করেছি। আমাদের কমান্ডো তাদের আনার ব্যবস্থা নিয়েছি। পরদিন সকাল ৯ টার মধ্যে হলি আর্টিজান থেকে জিম্মিদের উদ্ধার করা এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সফলতার সাথে তাদের আক্রমণ মোকাবিলা করি। এরপর পরই আমেরিকার ওই রাষ্ট্রদূত তার টুইট সরিয়ে ফেলেন।