শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের (ভিসি) পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অমানবিক ও দানবীয় আচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক ও জনপ্রিয় লেখক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করছে। তাদের প্রতি সৌহার্দ্য প্রদর্শনের পরিবর্তে নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। তারা না খেয়ে দাবি আদায়ে যেভাবে অনশন করে যাচ্ছে তার প্রতি সকলের সম্মান দেখানো উচিত।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় তার অনুরোধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙে। নিজ হাতে পানি খাইয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান তিনি। তবে অনশন ভাঙলেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি আমার জীবনে এত আনন্দ আর কখনো পাইনি। তবে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলন দমাতে যে প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছিল তা অমানবিক, নিষ্ঠুর ও দানবীয়।’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ায় সাবেক শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, ‘যারা আন্দোলনকারীদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছিল, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা খুবই নিন্দনীয়। ছাত্রদের সাহায্য করে যদি অ্যারেস্ট হতে হয়, তাহলে আমি হব। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর একটা স্মারকগ্রন্থে লেখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাকে ১০ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়া হয়েছে। আমি এই সম্মানীর টাকাটা আন্দোলনের ফান্ডে দিচ্ছি। এ টাকা দিয়ে তোমাদের তেমন কিছু হবে না জানি। কিন্তু আমি দেখতে চাই সিআইডি আমাকে অ্যারেস্ট করে কি না।’
তিনি বলেন, অজ্ঞাত ২০০ শিক্ষার্থীর নামে মামলা হয়েছে। কেউ কেউ গ্রেপ্তার হয়েছে। তাদের আদালতে সোপর্দও করা হচ্ছে। আমি জোর দাবি জানাই তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হোক।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের মেডিকেল সাপোর্ট বন্ধ করে দেওয়ারও নিন্দা জানান জাফর ইকবাল। বলেন, এখানে শিক্ষার্থীরা সবাই শীতে কষ্ট করছে। তাদের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। কিন্তু তাদের জন্য কোনো মেডিকেল টিম নেই।
মঙ্গলবার রাতে স্ত্রী সাবেক অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হককে নিয়ে ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হন জাফর ইকবাল। ভোর চারটায় অনশনস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের কথা শোনেন। দুই ঘণ্টার বেশি সময় অশনরত শিক্ষার্থীদের কথা শোনেন। এসময় পুলিশের হামলার বর্ণনা দেন শিক্ষার্থীরা। এ ধরনের হামলার ঘটনাকে খুবই নিন্দনীয় বলে উল্লেখ করেন জাফর ইকবাল।