প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ে ডিফেন্স ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টে অডিটর পদের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং উত্তর সরবরাহের অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের মধ্যে রয়েছেন বরখাস্ত হওয়া সরকারি কর্মকর্তা ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান।
শনিবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
তিনি বলেন, কাকরাইলের নিউ শাহিন হোটেল থেকে অসাধু উপায় অবলম্বনকারী দুই পরীক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাফরুল সেনপাড়া পর্বতা এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ডিভাইস, প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্রের খসড়াসহ আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি পুলিশের আরও একটি দল বিজিপ্রেস উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে পরীক্ষার্থী এবং অন্যতম পরিকল্পনাকারী মাহবুবা নাসরীন রূপাকে টাকা, ডিজিটাল ডিভাইসসহ গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্যমতে অপর আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মিন্টো রোডের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে মাহমুদুল হাসন আজাদ, নাহিদ হাসান, আল আমিন সিদ্দিকী আগেও প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ২০১৩, ২০১৬ ও ২০১৯ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে বিভিন্ন অ্যাপ, ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষা হল থেকে প্রশ্ন ফাঁস করে দেওয়া, বাইরের রুমে ওয়ানস্টপ সমাধান কেন্দ্র বসিয়ে স্মার্ট ওয়াচ, এয়ার ডিভাইস, মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে উত্তর সরবরাহ করার কাজ করতেন।
এর আগে, প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ে ডিফেন্স ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের ৫৫০ জন অডিটর পদে নিয়োগের জন্য ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে বিকেল ৪টা ১৫ পর্যন্ত ৭০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা হয়। চাকরি প্রত্যাশীদের অনেকে অভিযোগ তোলেন, এ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশও এর সত্যতা পেয়েছে। প্রশ্ন ফাঁস ও আগেই উত্তর সরবরাহ করার অভিযোগে শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ও কাকরাইল এলাকা থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নোমান সিদ্দিকী, মাহমুদুল হাসান আজাদ, আল আমিন রনি, নাহিদ হাসান, শহীদ উল্লাহ, তানজির আহমেদ, মাহবুবা নাসরীন রুপা, রাজু আহমেদ, হাসিবুল হাসান ও রাকিবুল হাসান।
তাদের মধ্যে মাহমুদুল হাসান আজাদ হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (সিজিএ) অফিসের বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা এবং মাহবুবা নাসরীন রুপা বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ইয়ার ডিভাইস ছয়টি, মাস্টার কার্ড মোবাইল সিম হোল্ডার ছয়টি, ব্যাংকের চেক পাঁচটি, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প সাতটি, স্মার্ট ফোন ১০টি, বাটন মোবাইল ছয়টি, প্রবেশপত্র ১৮টি ও অডিটর নিয়োগ পরীক্ষার ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র তিন সেট জব্দ করা হয়।