এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কতজন নিখোঁজ এবং কতজনের প্রাণহানি হয়েছে তা সুনির্দিষ্টভাবে কেউ বলতে পারছে না। খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব থেকে শুরু করে স্থানীয় জেলা প্রশাসন এবং ভলান্টিয়ারদের কাছে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন লঞ্চ দুর্ঘটনায় ৪১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এ ঘটনায় আহত ৮১ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৪৬ জনের চিকিৎসা চলছে। ১৬ জনকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী জানিয়েছেন, সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান ১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩৮ জনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ৩টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন এই কর্মকর্তা। জোহর আলী বলেন, শুক্রবার ৩৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ঢাকা নেওয়ার পথে এক শিশু মারা যায়। পরে শুনেছি ঢাকায় আরও দুজন মারা গেছে। কিন্তু তা আমি নিশ্চিত নই। এখন পর্যন্ত ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে ৩৮ জনের প্রাণহানির তথ্য রয়েছে।
এদিকে বরগুনায় আরও ১৭ জন লঞ্চ যাত্রীর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান। তিনি জানিয়েছেন, ঝালকাঠিতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৭টি মরদেহ বুঝে পেয়েছেন। যার মধ্যে ১০ জনের পরিচয় সনাক্ত হয়েছে। বাকি ২৭ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, পরিচয় শনাক্ত না হওয়া যে কয়জনকে দাফন করা হয়েছে সে মরদেহগুলোর বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। নমুনা রিপোর্ট এলে পরিচয় জানা যাবে বলে আশা করেন তিনি।
তবে ঝালকাঠিতে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মুখপাত্র রাজু হাওলাদার জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে এবং সরকারি তথ্যের সঙ্গে সমন্বয় করে এখন পর্যন্ত ৫১ জনের নিখোঁজের তালিকা করা হয়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সুগন্ধা নদীর তীরে ঝালকাঠি পৌর শহরের মিনি পার্কে রেড ক্রিসেন্টের বুথে এসে স্বজনরা এই ৫১ জনের নিখোঁজের তথ্য লিপিবদ্ধ করেন। রাজু বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর ৩৫ জন ভলান্টিয়ার উদ্ধার অভিযানে যায়। তারা এখন পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছে।