ঢাকা থেকে বরগুনাগামী ‘অভিযান-১০’ নামক লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের আগে ‘বিস্ফোরণ’ এর শব্দ পাওয়া যায় বলে লঞ্চটিতে থাকা যাত্রীরা জানিয়েছেন।
ওই লঞ্চের বেঁচে যাওয়া যাত্রী আব্দুর রহিম জানান, রাতে ডেক থেকে তিনি হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পান। তারপর লঞ্চের পেছন দিক থেকে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে আগুন পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত হয়ে তিনি ডেক থেকে নদীতে লাফিয়ে পড়ে প্রাণ বাঁচান।
অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হাম জালাল সংবাদমাধ্যমকে জানান, লঞ্চের কেরানী আনোয়ার ভোর রাত ৩টা ৫ মিনিটে তাকে ফোন করে আগুন লাগার খবর দেন। তিনি জানান, দোতলায় একটা বিস্ফোরণ হয়, সঙ্গে সঙ্গে কেবিনে আর লঞ্চের পেছনের বিভিন্ন অংশে আগুন দেখা যায়। তারপর তৃতীয় তলার কেবিন ও নিচতলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
হাম জালাল আরও জানান, ওই লঞ্চে আগুন নেভানোর অন্তত ২১টি যন্ত্র ছিল; কিন্তু এত দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে যে, সেগুলো ব্যবহারের সময় পাওয়া পায়নি। তিনি আরও জানান, একটি পাইপ গেছে ইঞ্জিন থেকে, সেখানে প্রথম বিস্ফোরণ হয় বলে আনোয়ার তাকে জানিয়েছে।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, যেখানে লঞ্চটিতে আগুন লেগেছে, তার ইঞ্জিন রুমের অংশটি বেশি পুড়েছে। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন।
বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে জানানো হয়, লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বন্দর ও পরিবহন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রায় চারশ যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায় বলে জানা গেছে। চাঁদপুর ও বরিশাল টার্মিনাল লঞ্চটি থামে এবং যাত্রী উঠা-নামা করে। ঝালকাঠির গাবখানের কাছাকাছি সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার পর লঞ্চে আগুন ধরে যায়। এতে অন্তত ৩৮ জনের প্রাণহানি হয়।