দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন থেকে সুরক্ষায় বুস্টার ডোজ ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর বলে ব্রিটিশ গবেষণায় উঠে এসেছে।
এ পর্যন্ত ওমিক্রন নিয়ে পাওয়া তথ্যগুলো কম্পিউটার মডেলিং করে যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষকরা এমন তথ্য জানান। খবর বিবিসির।
খবরে বলা হয়, ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে বুস্টার ডোজে সুরক্ষার হার ৯৭ শতাংশ হলেও ওমিক্রনের ক্ষেত্রে তা ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর। অর্থাৎ বুস্টার ডোজ পাওয়া প্রতি ১০০ জনের মধ্যে কমপক্ষে ৮০ জনকে হাসপাতালে যেতে হবে না।
ওমিক্রনের ক্ষেত্রে এ ধরনের গাণিতিক মডেলকে যথেষ্ট মনে করছেন না ইউকে ভ্যাকসিন টাস্কফোর্সের সাবেক চেয়ার ড. ক্লাইভ ডিক্স। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের মডেলে বিশাল অনিশ্চয়তা আছে। ওমিক্রনের কারণে হাসপাতালে ভর্তি, আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া ও মৃত্যুর আরও অন্তত এক মাসের তথ্য হাতে পাওয়ার পর বুস্টার ডোজ নিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী হতে পারবো।’
নভেম্বরের শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার গবেষকরা করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন শনাক্তের কথা জানান। এরপর থেকে দ্রুতগতিতে দেশটিতে কোভিড রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। পরে ভাইরাসটির এই ধরনটি দক্ষিণ আফ্রিকার গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই ডেল্টাকে সরিয়ে ওমিক্রন দেশটিতে প্রভাবশালী ভ্যারিয়েন্ট হয়ে উঠেছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া খবরে বিশ্বের প্রায় ৭৭টি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন এ ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া গেছে।
ভ্যারিয়েন্টটির জিন বিন্যাসের পরিবর্তন বা মিউটেশনের সংখ্যা অনেক বেশি হলেও এটি অন্য ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় বেশি সংক্রামক কি না এবং ভ্যাকসিনের সুরক্ষা এড়িয়ে যেতে সক্ষম কি না তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীদের কাছে থাকা প্রাথমিক তথ্য-উপাত্তে ভ্যারিয়েন্টটি কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে কার্যকর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কিছু অংশকে এড়িয়ে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত মিললেও বিশ্লেষণটি চূড়ান্ত নয় বলে মত অনেক বিশেষজ্ঞের।
ইমপেরিয়ালের গবেষণা দলের প্রফেসর আজরা গনি জানান, ‘ওমিক্রনের সিভিয়ারিটির পরিসর সম্পর্কে জানতে আরও কয়েক সপ্তাহ প্রয়োজন। তবে সম্ভাব্য যেকোনও প্রভাব মোকাবিলায় সরকারকে পরিকল্পনা হাতে রাখতে হবে।’ আর এক্ষেত্রে বুস্টার ডোজকে বড় পরিসরে জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষার একটি অংশ মনে করেন তিনি।