দীর্ঘ তিন বছর পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য শ্রমবাজার খুলতে সমঝোতা স্বাক্ষর করবে দেশটি। কোনো প্রকার সিন্ডিকেট ছাড়াই মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী পাঠাতে দেশটিতে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) অধীনে ডাটাব্যাংক থেকেই কর্মী পাঠাতে চায় বাংলাদেশ সরকার।
শুক্রবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি, মালয়েশিয়ার বাজার নিয়ে অতীতে অনেক কিছু হয়েছে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর অতীতকে দূর করার চেষ্টা করছি। আমি সফল হবো কি না সেটা নির্ভর করবে সমঝোতা স্বাক্ষরের পর। তবে আমার আগের যে প্রতিশ্রুতি ছিল সেটা এখনো আছে। আমি কোনো সিন্ডিকেটের পক্ষপাতি না। আমরা যে প্রস্তাব পেয়েছি সেখানে সিন্ডিকেটের কোনো বিষয় নাই।’
অভিবাসন ব্যয় সম্পর্কে জানতে চাইলে ইমরান আহমদ বলেন, ‘আমরা চাইব কর্মীরা যেন কম অভিবাসন ব্যয়ে সেখানে যেতে পারে।’
কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রবাসী কল্যাণ সচিব মুনিরুছ সালেহীন বলেন, ‘আমরা মালয়েশিয়ায় ডাটাব্যাংক থেকে কর্মী পাঠাতে চাই। মালয়েশিয়া দিয়ে আমরা এ প্রক্রিয়া শুরু করব। ভবিষ্যতে শুধু মালয়েশিয়া নয়, সব দেশেই ডাটাব্যাংক থেকে কর্মী পাঠাতে পারব বলে আশা করছি।’
মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার খুলতে আগামী রবিবার সমঝোতা স্বাক্ষর করবে বাংলাদেশ। সেজন্য আগামীকাল শনিবার রাতে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদসহ একটি প্রতিনিধি দল। পরদিন ঢাকার পক্ষে মন্ত্রী ইমরান এবং মালয়েশিয়ার পক্ষে দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানানকে শ্রমবাজার নিয়ে এমওইউ স্বাক্ষর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১৮ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রমিক নেওয়া বন্ধ রয়েছে। দেশটিতে ১০ লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছেন। করোনাভাইরাস মহামারির সময় মালয়েশিয়াপ্রবাসী যেসব বাংলাদেশি শ্রমিক দেশে এসেছিলেন পরে তাদের জন্যও দেশটিতে প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে অনুমোদন দেয় মালয়েশিয়া সরকার। বাংলাদেশ থেকে সব পেশার শ্রমিক নেওয়ার অনুমোদন দেয় দেশটি। বিশেষ করে গৃহকর্মী, বাগান, কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা, খনি ও খনন এবং নির্মাণ খাতে বাংলাদেশি কর্মী নেবে দেশটি।
সংবাদ সম্মেলনে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান, বিএমইটি মহাপরিচালক শহীদুল আলম এবং এনডিসিসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।