কানাডার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ২১ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে-৮৫৮৫ ফ্লাইটে তিনি দেশত্যাগ করেন।
এর আগে রাত সাড়ে ৯টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে পৌঁছান জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান। এসময় তার পরনে ছিল কালো রঙে ব্লেজার-টি শার্ট, জিন্সপ্যান্ট, কালো জুতা ও কালো ক্যাপ।
একইদিন সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে গুলশানের ১ নম্বর থেকে দুই নম্বর যেতে দেখা যায়। এসময় তিনি সাদা রংয়ের ল্যান্ড ক্রুজার (গাড়ি নম্বর -ঢাকা মেট্রো -ঘ ১৮: ৩৮২৭) গাড়িটি নিজেই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। গাড়িতে একাধিক লাগেজ ছিল। তিনি ছাড়া গাড়িতে কেউ ছিলেন না। পরে গাড়িটি আজাদ মসজিদের পাশের রাস্তা দিয়ে দ্রুতগতিতে বনানীর দিকে এগিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটের একটি ফ্লাইটে মুরাদ হাসানের ঢাকা ছাড়ার কথা ছিল। পরে দুই ঘণ্টা দেরিতে অবশেষে ১ টা ২১ মিনিটে তার ফ্লাইটটি শাহজালাল ছেড়ে যায়।
এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, বুধবার কানাডায় যাওয়ার জন্য টিকিট কাটেন মুরাদ হাসান। বৃহস্পতিবার ও আগামী দুইদিনের কানাডাগামী বিমানের একাধিক টিকেট বুকিং করেন তিনি (মুরাদ)। তিনি কানাডার টরেন্টোতে যাবেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মুরাদ হাসানের যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল, সেটি পদত্যাগের দিন (মঙ্গলবার) তা বুঝিয়ে দেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে সম্প্রতি ‘অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী মুরাদ। এমন মন্তব্যের পর মুরাদ হাসানের পদত্যাগের দাবি তোলে বিএনপি। তার ওই বক্তব্যের সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছিলেন নারী অধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবিও উঠেছিল।
এরইমধ্যে গত রবিবার ঢাকাই চলচ্চিত্রের নায়িকা মাহীর সঙ্গে মুরাদের টেলিফোন কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে ওই চিত্রনায়িকার উদ্দেশে তাঁকে ‘কুরুচিপূর্ণ’ কথা বলতে শোনা গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসাশাস্ত্রের ডিগ্রিধারী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগ করতে সোমবার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।পরেরদিন দুপুরে তিনি অনলাইনে পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি।
এর আগেও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী থাকাকালেও নানান সময়ে বেফাঁস মন্তব্য করে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন ডা. মুরাদ হাসান। এদিকে প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার পর তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের পদ থেকেও। সংসদ সংদস্য পদ থাকবে কি না তা নিয়ে হয়েছে রিট।