নাটোর শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে, জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার ০২ নং মাধনগর ইউনিয়নের ভট্টপাড়া গ্রাম। দুর্গম এই গ্রামটি হালতির বিলের উত্তর পশ্চিম জুড়ে অবস্হিত। জেলা সদরের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম ছিল, ট্রেন, বর্ষাকালে নৌকা আর খরা মৌসুমে পায়ে হাঁটা পথ।
বর্তমানে সড়ক নির্মাণ হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও গ্রামবাসীর ভাগ্যের তেমনভাবে ঘটেনি উন্নয়ন। ভট্টপাড়া গ্রামের মানুষ কৃষিতে যেমন অবদান রেখেছেন, তেমনি ভাবে মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে এই গ্রামের মানুষের রয়েছে অনেক অবদান।
ভট্টপাড়া গ্রামের ২৬জন মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধে। ইতিহাসে তাদের কথা লিখা না থাকলেও শহীদ আইয়ুব আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসানুজ্জামান ভুলু এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল ইসলাম জহের এই তিনজন মুক্তিযোদ্ধার নাম, মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে লিপিবদ্ধ হয়েছে।
ভট্টপাড়া গ্রাম রাজশাহী অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের অভয়ারণ্য ছিল। অনেক মুক্তিযোদ্ধারা শেল্টার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এখানে গড়ে উঠেছিল প্রাথমিক যুদ্ধের ট্রেনিং সেন্টার। ভট্টপাড়ার মোট ১৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার একটি দল, ওয়ালিয়ার ময়না যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
এছাড়া আঞ্চলিক কমান্ডার ওহিদুর রহমানের নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় অংশগ্রহণ করেছেন বিভিন্ন খণ্ডযুদ্ধে আরও ১৩ জন। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না পাওয়া এই গ্রামের ১০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন, তারা হলেন- মরহুম আব্দুর রশিদ মাষ্টার, মরহুম আফাজ আলী মন্ডল, মরহুম জহির আলী মন্ডল, মরহুম নফির উদ্দিন মন্ডল, মরহুম আব্দুল মালেক, মরহুম ওয়াজেদ আলী সরদার, মরহুম খলিলুর রহমান, মরহুম নাসির আলী শেখ, মরহুম আকবর আলী শেখ, মরহুম মফিজ উদ্দিন প্রামাণিক আর জীবিত থাকলেও আব্বাস আলী শেখ, ছায়েদ আলী সরদার, তৌহিদুর রহমান, শেফাতুল্লাহ শেখ, আব্দুর রহমান পাঁচু, কফিল উদ্দিন সরদার এবং নজরুল ইসলাম স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেও এই ০৭ জন মুক্তিযোদ্ধার কপালে এখনো জোটেনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল ইসলাম জহের জানান, খাজুরা বাজারে একটি রাজাকার ক্যাম্প ছিল ওই ক্যাম্প থেকে মানুষের প্রতি বিভিন্ন ধরনের অনাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন করা হতো। আমাদের আঞ্চলিক কমান্ডার ওহিদুর রহমানের নির্দেশে এবং গ্রুপ কমান্ডার সাজেদুর রহমান দুদুর নেতৃত্বে- খাজুরা বাজারে রাজাকার ক্যাম্পে আমরা গেরিলা অভিযান করেছিলাম। সেই অভিযানে আমরা আমাদের সহযোদ্ধা আইয়ুবকে হারিয়েছিলাম। দলছুট আমরা রাতের অন্ধকারে তাকে হারিয়ে ফেলি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তাকে পাওয়া গিয়েছিল না।
পরে জানতে পারি তিনি রাজাকারের হাতে ধরা পড়েছিলেন এবং রাজাকাররা তাকে ধরে নিয়ে খানসেনাদের কাছে হস্তান্তর করেছিল। আইয়ুব মুক্তিযোদ্ধা, সেই অপরাধে তাকে, নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, শহীদ আইয়ুব‘এর স্মৃতি রক্ষার্থে এই ভট্টপাড়া গ্রামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
মো. তৈহিদুর রহমান জানান, মরহুম আব্দুর রশিদ মাষ্টারের নেতৃত্বে ভট্টপাড়া গ্রামের কমল সরকারের আমবাগানে যুদ্ধের ট্রেনিং গ্রহণ করেন। আনসার কমান্ডারের অধীনে তারা ১৩ জন নাটোর এসেছিলেন, রাইফেল সংকট ছিল ১৩ জনকে মাত্র দুইটি রাইফেল দেওয়া হয়েছিল এবং বাকিরা লাঠিসোটা হাতে নিয়ে ২৮ শে মার্চ ওয়ালিয়া ময়না যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
এছাড়া নলডাঙ্গা, আত্রাই, খাজুরা সহ অত্র অঞ্চলে বিভিন্ন খন্ড যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন কিন্তু এখন পর্যন্ত তাকে সরকারি গেজেটভুক্ত করা হয় নাই। তিনি আরো জানান, তার সহযোদ্ধা শহীদ আইয়ুব আলীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে, শহীদের মর্যাদা দিয়ে তার স্মৃতি রক্ষার্থে ভট্টপাড়া গ্রামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করার দাবি জানান তিনি।
মো. শেফাতুল্লা জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসানুজ্জামান ভুলুর নেতৃত্বে আমরা সঙ্গবদ্ধ হয়ে ওহিদুর রহমানের অধীনে মহান মক্তিযুদ্ধে যোগদান করি, তিনি আরো জানান,শহীদ আইয়ুব আলী অবিবাহিত ছিল। বহু আগেই তার পিতা শাহাদাত বরণ করেছিলেন। তার বিধবা মা ধর্মপরায়ণ একজন মহিলা ছিলেন।
তিনি কারো কাছে কোন সাহায্য সহযোগিতা নিতেন না। স্বামী ও একমাত্র সন্তান হারা এই নারীকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান একটি চেক দিয়েছিলেন। যে চেকের অর্থ দিয়ে ২৫ কাঠা জমি কিনেছিলেন। এবং ওই জমির আয় থেকে বাকি জীবনের জীবিকা নির্বাহ করেছেন তিনি।
তিনি আরো জানান, ভট্টপাড়া গ্রামের যে সকল মুক্তিযোদ্ধা এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়নি, তাদেরকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া সহ বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুবকে, সরকারিভাবে শহীদের মর্যাদা প্রদান করা উচিত বলে, তিনি মনে করেন।
শহীদ আইয়ুব আলীর বোন ফাতেমা বেওয়া জানান, তার ভাই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ভট্টপাড়া গ্রামের কমল সরকারের আমবাগানে তার ভাই মুক্তিযোদ্ধার ট্রেনিং গ্রহণ করেছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু একটি যুদ্ধে গিয়ে তার ভাই আর ফিরে আসেনি।
পরে তিনি জেনেছেন, খাজুরা রাজাকার ক্যাম্পে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়েছিলেন তিনি। দলছুট সঙ্গী-সাথীরা তাকে অন্ধকার রাতে খুঁজে পাননি। পরের দিন আত্রাই পাক সেনার কাছে আইয়ুব আলীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার মা বিধবা মানুষ ছিলেন। পাক সেনার ক্যাম্পে যোগাযোগ করার মতন কেউ ছিল না।
তার ভাইকে পাকসেনা ক্যাম্পে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ভাইয়ের মৃতদেহটি শেষবারের মতন তারা দেখতে পাননি। তিনি আরো জানান ভাই ছাড়া তিন কুলে তার কেউ ছিলনা। ভাইকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সম্মান দিয়ে তার নামে ভট্টপাড়া গ্রামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
শহীদ আইয়ুব আলীর ভাগিনা, ওবায়দুল মন্ডল জানান, তার মামা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। রাজাকারের হাতে ধরা পড়ে তাকে মিলিটারি ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়েছিল। মামাকে নৃশংসভাবে ভাবে হত্যা করা হয়েছিল। মামার নামে ভট্টপাড়া গ্রামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান তিনি। সেইসাথে সরকারিভাবে তার মামাকে শহীদের সম্মান প্রদান করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসানুজ্জামান ভুলু জানান, ১৯৭০ সালে পাকিস্তান সরকারের আমলে সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করেন। পরবর্তীতে পাকিস্তান সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর না করার জন্য জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে।
তারা গোপনে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র ও হানাদার সৈন্য আনতে থাকে। ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক গণ আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর প্রকৃত অর্থে বাঙালিরা স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য তৈরী হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার ০২ নং মাধনগর ইউনিয়নের ভট্টপাড়া গ্রামের মরহুম আব্দুর রশিদ মাস্টার এর নেতৃত্বে সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এলাকার যে সকল যুবক মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে চায় তাদেরকে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে পাঠাতে।
ভট্টপাড়া গ্রামের মোট ১৩ জন যুবক বিভিন্ন সম্মুখযুদ্ধ সহ খন্ড যুদ্ধ, গেরিলাযুদ্ধ, ওয়ালিয়া ছোট ময়না যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আনসার কমান্ডার, মরহুম আব্দুর রশিদ মাস্টার, আনসার কমান্ডার মো. সায়েদ আলী সরদার আনসার কমান্ডার মরহুম আফাজ আলী মন্ডল, মো. জহির আলী মন্ডল (আনসার), মো. আব্বাস আলী শেখ (আনসার), মো. শরফুদ্দিন বি.কম (আনসার), মরহুম শফির মন্ডল, মো.কফিল উদ্দিন সরদার (আনসার), মরহুম নফির উদ্দিন মন্ডল (আনসার) মো. গাহের আলি প্রাং (আনসার) মো. ওয়াজেদ আলী মন্ডল পচুঁ (আনসার),
মরহুম আব্দুল মালেক (আনসার), মো. তৌহিদুর রহমান (আনসার) এবং মো. মেহের আলী মন্ডল (আনসার) তারা ভট্টপাড়া গ্রামের দক্ষিনে কমল সরকারের আমবাগানে, গ্রামের যুবকদের প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর আহবানে উদ্বুদ্ধ হয়ে, নবাবের তাম্বুল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান ও আব্দুর রাজ্জাক‘এর অনুপ্রেরণায় ভট্টপাড়া গ্রামের অনেক যুবক তদানীন্তন নওগাঁ মহকুমার, আত্রাই থানার বীর মুক্তিযোদ্ধা, আঞ্চলিক কমান্ডার, সাবেক সংসদ সদস্য ওহিদুর রহমানের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করে বিভিন্ন এলাকায় খন্ড যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
ভট্টপাড়া গ্রামের এ.কে.এম হাসানুজ্জামান ভুলু, মরহুম ওয়াজেদ আলী সরদার, শহীদ আইয়ুব আলী, মো. জহুরুল ইসলাম জহের, শেফাতুল্লাহ শেখ কালু, মো. আব্বাস আলী শেখ, মো. আব্দুর রহমান, মরহুম খলিলুর রহমান, মো. নাসির আলী শেখ, মরহুম আকবর আলী শেখ,
মরহুম মফিজ উদ্দিন প্রামাণিক, মো. মজিবর রহমান, এবং মো. নজরুল ইসলাম (হালতি) মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহন করেছিলেন। খাজুরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়েছিল। খাজুরার রাজাকার ক্যাম্প আক্রমন করার জন্য,যুদ্ধকালীন গ্রুপ কমান্ডার সাজেদুর রহমান দুদু শাহ‘এর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ২১শে অক্টোবর রাত্রি আনুমানিক ১১.০০ টার সময় ভট্টপাড়া গ্রামের উত্তরে মরাঘাটিতে ভট্টপাড়া, মাধনগর, দুর্লভপুর, নাটোর ও সাধনগরের মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সঙ্গবদ্ধ করেছিলেন তিনি।
সেই রাতে যে সকল মুক্তিযোদ্ধারা খাজুরা রাজাকার ক্যাম্প আক্রমনে ছিলেন, তারা হলেন দুর্লভপুরের সহ কমান্ডার মোহাম্মদ আলী বাবলু, নাটোর থানার খন্দকার মুনসুর রহমান, সাইদুর রহমান, জিল্লুর রহমান, জাত আমরুলের সাইদুর শাহ্, ফজলার রহমান,পান্নাউল্লাহ, সমশের আলী, আইয়ুব আলী, আব্বাস শেখ, পাঁচু শেখ, নাসির, শেফাতুল্লাহ শেখ, আকবর শেখ, ওয়াজেদ, মফিজ প্রাং, মজিবর, খলিল ও হালতীর নজরুল, জহের, আনছার কমান্ডার সায়েদ আলী সরদার, আনছার কফিল উদ্দিন সরদার, এবং মো. তৌহিদুর রহমান।
ঘটনার তারিখে রাত্রি আনুমানিক ১১.৩০টায় মুক্তিযোদ্ধারা হামলার জন্য সবাই প্রস্তুত। দুর্লভপুর গ্রামের হারান উল্লাহ্ শেখ ছিপডিঙ্গি নৌকার আয়োজন করেছিলেন। শীতের রাত সারা বিল অন্ধকার, রহস্যময়, শুনশান, দূরে কোথাও কোথাও টর্চের আলো দেখা যায় আর নিশাচর পাখির পাখা ঝাপ্টানোর শব্দ শুনতে পাওয়া যাচ্ছিল।
মুক্তিযোদ্ধাদের ডিঙ্গিখানা তখন নুরিয়াগাছা গ্রামের পূর্বেদিকে ঠিক খাজুরার পশ্চিমে আসতেই খাঁড়ির উপর থেকে “হল্ড” শব্দ উচ্চারিত হলো। তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। শত শত গুলি লেগে তলিয়ে গেল ডিঙ্গি। ডিঙ্গি তলিয়ে গেলেও যুদ্ধ অব্যাহত ছিল তাদের।
অবশেষে রাজাকার ক্যাম্প ধ্বংস হলো। এরপর পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধারা কমান্ডারের নির্দেশে সাধনগর তালুকদারের মসজিদে একত্রিত হয়েছিলেন। যুদ্ধ শেষে সেখানে একে একে সবাই জড়ো হলেও আইয়ুব এলোনা।
আইয়ূব গোলাগুলির এক পর্যায়ে ডাঙ্গাপাড়ার এক হিন্দুবাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। গোলাগুলির সময় ডাঙ্গাপাড়ার লোকেরা খাজুরা গ্রামে চলেগিয়েছিল। যুদ্ধ থেমে গেলে তারা এসে দেখেছিল আইয়ুব কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। ওরা আইয়ুবের অনুরোধ উপেক্ষা করে রাজাকারের হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল।
পরে আইয়ুবকে ২২শে অক্টোবর কুচিয়া মাড়া ব্রীজে পাকিস্তানী সেনার হাতে তুলে দেয় রাজাকাররা। খান সেনারা নিষ্ঠুরভাবে আইয়ুবকে হত্যা করেছিল বলে তিনি জানান। বর্তমানে আয়ুব আলীর বোন অসহায় তাঁকে মুক্তিযোদ্ধার বোন হিসাবে ভাতা প্রদানের দাবী জানান তিনি।
ভট্টপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা তাদের গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদের জন্য গর্ব করেন, অহংকার করেন। যাঁরা আজও গেজেটভুক্ত হতে পারেননি তাদেরকে সরকারি উদ্যোগে গেজেটভুক্ত করা সহ শহীদ আইয়ুব আলীর স্মরণে ভট্টপাড়া গ্রামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য দাবী জানান তাঁরা।