নাটোরে উচ্ছেদকৃত অবৈধ ইটভাটা আবারও নির্মাণ। চলতি বছরের ২৪শে এপ্রিল প্রশাসনের উচ্ছেদের পর প্রশাসনের নাকের ডগায় বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আবারও নির্মাণ হচ্ছে অবৈধ ইটভাটা। এরফলে হুমকির মুখে বিলের তিন ফসলী জমি। আবারও আতঙ্কে কৃষক।
অনেকের অভিযোগ প্রশাসনের উপর মহলকে অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করে এমন কাজ করছেন তারা। দফায় দফায় প্রশাসনের অভিযান তবুও তেলকুপি বিলের তিন ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণের কাজ অব্যাহত রয়েছে
নাটোর সদর উপজেলার ছাতনি ইউনিয়নের তেলকুপি বিল জুড়ে চলছে ইটভাটা নির্মাণ কাজ। এলাকাবাসীরা বলছেন, ইটভাটা নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার পরে প্রশাসন একবার ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন।
পুনরায় কিভাবে নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণর দিকে এগিয়ে চলেছে? এমন প্রশ্নের উত্তর জানা নেই এলাকাবাসীর। অপরদিকে ইটভাটা নির্মাণ হলে বিলের অন্যান্য কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন। অনেকেরই অভিযোগ বেকায়দায় ফেলে সুকৌশলে জমি লিজ দিতে বাধ্য হচ্ছেন ইটভাটা মালিককে।
নাটোর শহরের ভেতর দিয়ে নলডাঙ্গা উপজেলায় অভিমুখে সড়ক সংলগ্ন তেলকুপি বিল।বিলের প্রায় এক অংশ জুড়ে চলছে কর্মযজ্ঞ ইটভাটা চিমনির। অদূরে পাহাড়ের মতন উঁচু করে রাখা আছে মাটি। ফসলি জমি ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে ইমারত। বিলটির তিন দিকে ফসলি জমি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন এলাকাবাসী জানান, দুইজন কৃষকের প্রায় ১৪ বিঘা জমি ১০ বছরের জন্য লিজ দেয় নগদ টাকার লোভে। ওই জমি নেওয়ার পর থেকে অন্যান্য কৃষকদের মাঝে টাকার প্রলোভন এবং চাপ দেওয়া হয় ইটভাটার জন্য লিজ দিতে। বর্তমানে প্রায় ত্রিশ বিঘা জমি লিজ নিয়েছে ইটভাটা মালিক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কৃষক জানান, জীবন থাকতে তিনি জমি লিজ দেবেন না। তার জমিতে তিনি নিজেই সোনার ফসল ফলাবেন। তিনি আরো জানান, তেলকুপি বিলে বছরে তিন থেকে চারটা ফসল ফলে। তার জমিতে যদি ফসল কমে যায় তবুও সে ইটভাটায় লিজ দেবেন না।
এমন ফসলি জমি বিনষ্ট করে এই ইটভাটা নির্মাণের অনুমতি কি পরিবেশ অধিদপ্তর দিয়েছে? এমন প্রশ্নের উত্তর কি পাওয়া যবে? গত ২৪শে এপ্রিল ২০২১ খ্রিস্টাব্দে নির্মাণাধীন ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রশাসন।
অভিযান চালিয়ে নির্মাণাধীন ইটভাটার বৈধতা না থাকায় ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রশাসন। নির্মাণাধীন ইটভাটা ভেঙে দিয়ে ভাটা মালিকে আগামী দশ দিনের মধ্যে, ইটভাটার সরঞ্জামাদি স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
ইটভাটা মালিক হাজী খোরশেদ আলম জানান, “আমার ইটভাটাটি স্থানান্তর করা হচ্ছে। প্রশাসনের ইচ্ছে হয়েছিল ভেঙে দিয়েছিল। আমি আবার নির্মাণ করছি। প্রশাসন যদি মনে করে আবার ভেঙে দেবে, তাহলে দেবে।”
নাটোর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ আফরোজা খাতুন জানান, “স্থানীয়ভাবে অভিযোগ পেয়েছিলাম ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ করা হচ্ছে সরেজমিনে গিয়ে ইটভাটা নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
নির্মাণাধীন কাজ চলমান রয়েছে কেন ? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো অনুমতি দেওয়া হয় নাই।জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কোনো অনুমতি পেয়েছেন কিনা সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই।”
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, তিনি জেলায় নতুন এসেছেন তাই সবকিছু এখনো তার নখদর্পণে আসে নাই। বিষয়টি তিনি অবগত হলেন। অতিসত্বর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানালেন তিনি।