ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়ন করে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের দাবিতে মাথায় প্রতীকী ভোট বাক্স নিয়ে বরিশালে পদযাত্রা করে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছেন হানিফ বাংলাদেশি নামে এক ব্যক্তি।
তিনি জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে স্বারকলিপি প্রদান এবং ভোটাধিকার ও কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য প্রতীকী গণভোট সংগ্রহ কর্মসূচির ৩৬তম দিনে সোমবার (২৯ নভেম্বর) বরিশালের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বারকলিপি দিয়ে প্রেসক্লাব ও জেলা শহরে পদযাত্রা করে মানুষের গণমত সংগ্রহ করেছেন।
কর্মসূচি সম্পর্কে সোমবার (২৯ নভেম্বর) সকালে বরিশাল প্রেসক্লাবে সামনে হানিফ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত দেশের সংবিধানে বলা আছে রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। রাষ্ট্রের ওপর জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠার প্রথম শর্ত হলো ভোটাধিকার। স্বাধীনতার ৫০ বছর যাবত যে দল যখনই রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে, সে দলই কম-বেশি ভোটাধিকার গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করেছে, আজকের যে পরিচিতি তা একদিনে তৈরি হয়নি, সব শাসকদলের অপরাজনীতি এই চরম অবস্থা সৃষ্টি করেছে। এই ভয়াবহ অবস্থার উত্তরণ ও একদিনে সম্ভব নয়। রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতি প্রতিহিংসা থেকে সহিংস পরায়ণ, অবিশ্বাসের সংস্কৃতি চলমান, এবং প্রশাসনের দায়িত্বরত কর্মকর্তারাও কোন না কোন দলের আনুগত পোষন করে চলে সেজন্য রাজনীতিতে অবিশ্বাস কাজ করে। এই অবিশ্বাস ও আস্থা সংকটের কারনে কয়েক বার অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়েছে, এবং হাইকোর্ট সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করেছে, একটি গণতান্ত্রিক দেশে অনির্বাচিত তত্ববধায়ক সরকার পদ্ধতি বেশি দিন চলতে পারে না। কারণ অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক রাজনীতিবিদের জন্য বড় লজ্জাজনক জনক’।
তিনি বলেন, ‘দেশে মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে রাজনীতিবিদেরা ব্যর্থ হয়েছে। রাজনীতিতে যে আস্থার সংকট তার জন্য রাজনীতিবিদরাই দায়ী। এখন জনগণের ভোটাধিকার ও নিবিঘ্ন ভোট দেওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করতে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে এবং একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে সংবিধানের যে আইনের কথা বলা আছে রাষ্টপতি সব মহলের সঙ্গে আলোচনা করে সেই আইন প্রণয়ন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন ও সারা দেশে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সর্বস্তরের কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করলে জনগণ মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগে আগ্রহ সৃষ্টি হবে, এবং কার্যকর গণতান্ত্রিক দেশ বিনির্মানে আমরা এগিয়ে যাবো এবং একটি আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো’।
এ সময় তার দাবির ওপর সমর্থন জানিয়ে সাধারণ মানুষ প্রতীকী ভোটের বাক্স মাথায় নিয়ে সমর্থন জানান।
হানিফ নোয়াখালীর আব্দুল মান্নানের ছেলে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। দুই মাসের ছুটি নিয়ে জানুয়ারি থেকে দেশের ৬৪ জেলায় পদযাত্রা শুরু করেন।
বরিশালে আসার আগে তিনি ভোলা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। ৩০তম দিনে তিনি পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেবেন।