কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক আলোচিত সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী ইন্তেকাল করেছেন । সোমবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।
গত শনিবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে নুরুর ইসলাম জিহাদীকে ল্যাব এইডে ভর্তি করা হয়। দুই দিন তিনি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
হেফাজত মহাসচিবের ছোট ছেলে মাওলানা রাশেদ বিন নূর তার বাবার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
রাশেদ বিন নূর জানান, শনিবার রাতে তার বাবা স্ট্রোক করেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। রবিবার তার ওপেন হার্ট সার্জারি করার কথা থাকলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।
শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে বক্তব্য দেন হেফাজত মহাসচিব। সেই সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও অতিথি হিসেবে যোগ দেন। সেখান থেকে ফিরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি।
হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদ্রিস জানান, আজ এশার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে নুরুল ইসলাম জিহাদীর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে ওসিয়ত অনুযায়ী হাটহাজারী মাদ্রাসার কবরস্থানে দাফন করা হবে।
গত বছরের ডিসেম্বরে হেফাজত মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমীর ইন্তেকালের পর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পান মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী। গত মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে হেফাজতের আন্দোলনে নাশকতার ঘটনায় প্রচণ্ড চাপের মুখে থাকা সংগঠনটি আগের কমিটি বিলুপ্ত করে। তবে পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিরও সদস্য সচিব ছিলেন নূরুল ইসলাম জিহাদী। এর কয়েক মাস পর হেফাজতের নতুন কমিটি হলে তিনি মহাসচিবের দায়িত্ব পান।
মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদীর জন্ম ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। তিনি হেফাজতে ইসলাম ছাড়াও আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব এবং খিলগাঁওয়ের আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাখজানুল উলুম মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও শায়খুল হাদিস ছিলেন। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাক ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।