সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাকে কয়েকটি শিক্ষাবর্ষের সবধরনের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার শাস্তি দিলেও স্বপদে বহাল রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
উপাচার্যের অনুমোদনক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. সোহরাব আলী স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশ সূত্রে এই শাস্তির বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রশাসনিক আদেশটি রবিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কার্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ২১ নভেম্বর এতে স্বাক্ষর করেছেন।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে- রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থীদের পাঠদান, পরীক্ষা গ্রহণসহ যাবতীয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অভিযুক্ত প্রভাষক ফারহানা ইয়াসমিনকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, উপাচার্য ও অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন নিজেই কাঁচি হাতে ১৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বলে অভিযোগে ওঠে। সেই শিক্ষার্থীদের একজন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে তাকে বকাঝকা করেন বলেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। এরপর ওই ছাত্র আত্মহত্যার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
ওই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনটি প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন। এই ঘটনায় ফারহানা ইয়াসমিনকে অপসারণের দাবিতে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ফারহানা ইয়াসমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি একটি বিজ্ঞপ্তিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড থেকে তাকে বিরত থাকতে বলা হয়।
এ ঘটনায় গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. সোহরাব আলীর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্তে ফারহানা ইয়াসমিনের দোষ প্রমাণিত হয় বলে জানা গেছে।