এ বার আর চাঁদে নয়, বাঙালির নজর মঙ্গলগ্রহে। তাই আগেভাগেই ওই লালগ্রহে জমি কিনতে উদ্যোগী হয়েছেন অনেক বাঙালি। ইতিমধ্যেই মঙ্গলগ্রহে জমি কিনে ফেললেন হুগলির শ্রীরামপুরের শৌনক দাস।
তবে না, ওখানে জমি কেনার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা লাগেনি, বলতে গেলে প্রায় জলের দরেই মঙ্গলগ্রহে জমি কিনে ফেলেছেন সদ্য বিবাহিত শৌনক দাস। ওখানে ১ একর জমির দাম পড়েছে মাত্র ৩,০০০ টাকা।
তিনি জানান, মঙ্গলগ্রহের মহাকাশযানের মাইক্রোচিপে তাঁর নাম-ঠিকানা চলে গেছে। এ জন্য তিনি খুবই আনন্দিত। তিনি স্বপ্ন দেখেন একদিন মঙ্গলগ্রহে যাওয়ারও সুযোগ পাবেন।
শৌনক একটি বেসরকারি সংস্থার ইনস্যুরেন্স কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মচারী। গ্রহ, নক্ষত্র নিয়ে বরাবরই তাঁর আগ্রহ ছিল। গুগলের দফতরেও তিনি আমন্ত্রিত হয়ে গেছেন। তিনি জানান, একদিন গুগল সার্চ করতে করতে দেখেন, মঙ্গলগ্রহে জমি বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেখানে জমি কেনার জন্য আবেদন করেন। মঞ্জুর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টাকাও পাঠিয়ে দেন। কিছু দিন হল নাসার অনুমোদিত একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে তাঁর কাছে মঙ্গলগ্রহের ওই এক একর জমির দলিলও এসে পৌঁছেছে। তিনি আরও জানান, মঙ্গলগ্রহে জমি কেনার তালিকায় রয়েছেন বিশ্বের আরও ১ কোটি ৩২ হাজার ২৯৫ জন। নাসা থেকে পাঠানো মহাকাশযান আগামী বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলগ্রহের মাটি ছোঁবে। সেই মহাকাশযানে সবার সঙ্গে তাঁরও মাইক্রোচিপ যাবে।
তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, জমি তো কিনেছেন, কিন্তু ওই মঙ্গলগ্রহে কী আপনি কোনও দিন যেতে পারবেন? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, যে দ্রুত গতিতে বিজ্ঞান এগোচ্ছে, তাতে মনে হয় সে দিন আর বেশি দূরে নেই, যে দিন ওই মঙ্গলগ্রহও মানুষের বাসযোগ্য হয়ে উঠবে। তখন তো আর এই দামে ওখানে জমি পাব না, তাই এখনই কিনে রাখলাম। তত দিন যদি আমি না থাকি, আমার ছেলেমেয়েরা তো থাকবে…
নাসা জানিয়েছে, যাঁরা জমি কিনেছেন আগামী দিনে তাঁদের মধ্যে থেকেই বেশ কয়েক জনকে নিয়ে মঙ্গলগ্রহে পাড়ি দেব আমরা। সেই তালিকাও তৈরি হয়ে গেছে। সেখানে অবশ্য শৌনকের নাম নেই। তবে পরবর্তিকালে তাঁর নামও হয়তো ওই রকম একটিমাত্র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে, এই আশায় বুক বাঁধছেন শৌনক।
জানা গেছে, ২০২৪ সালে চাঁদে লোক পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে নাসা। চন্দ্রযান এবং মঙ্গলযানের জন্য অভিযাত্রীদের ব্যবহারযোগ্য শৌচালয় বানাতে হবে। সেই শৌচালয়ের জন্য নকশা আহ্বান করেছে নাসা। গোটা বিশ্ব থেকে বহু মানুষ সেই নকশা পাঠিয়েছেন। পাঠিয়েছেন শৌনকও। ১ অক্টোবর নাসা জানাবে, কার নকশা তারা গ্রহণ করছে। শৌনকের বানানো নকশা যদি নাসা গ্রহণ করে, তা হলে আর দেখতে হবে না, একেবারে সোনায় সোহাগা।