৪৪ রানের লিড পেলেও ব্যাট হাতে স্বস্তিদায়ক শুরু পেলো না বাংলাদেশ। বরং শাহীন আফ্রিদি-হাসান আলীদের গতিঝড়ে বিকালের শেষটা হলো এলোমেলো। টপের ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ৩৯ রানে তৃতীয় দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম টেস্টে লিড দাঁড়িয়েছে ৮৩ রান।
ভাগ্য ভালো যে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানকে ২৮৬ রানে আটকে রাখা গেছে। তা না হলে স্কোরবোর্ডের চেহারা হতো ভিন্নরকম!
তার পরেও ব্যাট হাতে প্রত্যাশিত শুরুটা বাংলাদেশ পায়নি। চার ওভার পর্যন্ত শাহীন-হাসানদের গতি সামলান দুই ওপেনার। পঞ্চম ওভারে গিয়ে আর পারেননি ওপেনার সাদমান। তাকে এলবিডব্লিউতে সাজঘরে ফিরিয়েছেন শাহীন। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি তখন। এক বল পর নাজমুল শান্তকে আব্দুল্লাহ শফিকের ক্যাচ বানান তিনি।
দুই উইকেট হারানো বাংলাদেশের বিপদ আরও বাড়িয়ে দিয়ে যান অধিনায়ক মুমিনুল। তাকে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরিয়েছেন হাসান আলী। লিডিং এজ হয়ে বল জমা পড়ে আজহার আলীর হাতে। তাতে টানা দুই ইনিংসে ব্যর্থ হলেন অধিনায়ক।
১৫ রানে ৩ উইকেট পড়ে গেলে মনে হচ্ছিল সাইফ-মুশফিক প্রতিরোধ গড়ে খেলবেন। সেটাও করা যায়নি শাহীন আফ্রিদির কারণে। প্রথম ইনিংসের মতো বাউন্সারেই সাইফকে কাবু করেছেন এই পেসার। সাইফ ফিরেছেন ১৮ রান করে।
২৫ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করছেন মুশফিকুর রহিম। সঙ্গী হয়েছেন ইয়াসির আলী। চতুর্থ দিন তারা পরিস্থিতি কতটুকু সামাল দিতে পারে সেটাই দেখার। মুশফিকুর রহিম ক্রিজে আছেন ১২ রানে ও ইয়াসির আলী ৮ রানে।
অথচ দিনের শেষটা দেখে কে বলবে আগের দুই সেশন পাকিস্তানের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে বাংলাদেশ! ২৫৭ রানে পাকিস্তানের ৯ উইকেট তারা তুলে ফেলেছিল। সেখান থেকে ২৯ রানের জুটি গড়ে লিডের ব্যবধান কমিয়েছেন ফাহিম আশরাফ ও শাহীন। ফাহিমকে ৩৮ রানে তাইজুল ক্যাচে পরিণত করলে আর বড় হয়নি এই জুটি।
পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে ধস আনতে বড় ভূমিকা ছিল বামহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের। ১১৬ রানের বিনিময়ে একাই ৭ উইকেট নিয়েছেন। দুটি নেন এবাদত হোসেন, একটি নেন মেহেদী মিরাজ।
পাকিস্তান চাপে পড়ে যায় প্রথম সেশনেই। মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগে ৫৮ রান যোগ করতে পারে তারা। বিনিময়ে ৪ উইকেট তুলে নেন স্পিনাররা। পরের সেশনে হারায় বাকি ৬ উইকেট।
শুরুতে পাকিস্তানের ওপেনিং জুটির প্রতিরোধ ভেঙে দেন তাইজুল ইসলাম। জুটি ভেঙে ফেলার পর স্বাভাবিকভাবে নড়বড়ে থাকেন নতুন ব্যাটসম্যান। পরের বলে এই নড়বড়ে পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন আজহার আলী। লেগ বিফোরে সাজঘরে ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই।
তার পর একে একে ফেরান ফাওয়াদ আলম, হাসান আলী, নুমান আলী ও ফাহিম আশরাফকে। একপ্রান্ত আগলে আবিদ আলী চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলেছেন ঠিকই। কিন্তু তার সঙ্গী হয়ে কেউ চাপ কমাতে পারেননি।
আবিদ আলীর একার লড়াই থামে দ্বিতীয় সেশনে। তাইজুলের ৯৪তম ওভারে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে এই ওপেনার বিদায় নেন ১৩৩ রান করে। ২৮২ বল খেলা এই ব্যাটার রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। আবিদের বিদায়ের পর বাকিরা আর দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার মতো প্রতিশ্রুতিশীল ছিলেন না।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে ৩৩০ রানে গুটিয়ে দিয়ে গতকাল পাকিস্তান দুই সেশন পার করে দিয়েছিল কোনও উইকেট না হারিয়ে। বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে সফরকারীরা দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিল ১৪৫ রানে।