প্রফেসর শাহীন এম কবীর: এক অসামান্য আলোকবর্তিকা – ২
প্রফেসর শাহীন কবীরের সাথে আমার পরিচয়, ঘনিষ্ঠতা ও একসাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা দুই দশকের। এই দীর্ঘ সময় তাঁকে আমি দেখেছি নানা আঙ্গিক থেকে – পেশাদার লেখক, সম্পাদক, শিক্ষক, স্নেহময়ী মা, বোন বা কন্যা, দিলখোলা আড্ডার মধ্যমনি, কখনো মেন্টর বা অন্য কোন রূপে। এই মহিরুহকে আমি যেভাবে দেখেছি তাঁর খানিকটা ব্যক্ত করেছি গত পর্বে। এই পর্বে তাঁর ব্যক্তিত্বের আরও কিছু দিক তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
২০০৫ বা ২০০৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে খন্ডকালীন পিএইচডির জন্যে আবেদন করি আমি। আমার গবেষণা প্রস্তাবটি প্রফেসর শাহীন কবির খুব পছন্দ করেছিলেন। তিনি সেটি অত্যন্ত আগ্রহভরে তাঁর পিতা অধ্যাপক কবির চৌধুরীকে দেখালে তিনি আমার সাথে পরিচিত হতে চান। আপা আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর কাছে। স্যার আমাকে আশীর্বাদ করেন। কী এক কাজে ব্যস্ত থাকার জন্যে আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার সময় বের করতে পারছিলাম না। কোনভাবে কাউকে দিয়ে আবেদন পত্রটি আপা আমার জন্যে এনে দিতে পারবেন কিনা জানতে চাইলে আপা নিজের ড্রাইভারকে দিয়ে সেটি আনিয়ে দেন। আপার উপর আমার এই নির্ভরতা ও আমার জন্যেও আপার স্নেহশীলতা দেখে বন্ধুবর প্রফেসর মোঃ জুলফিকার হায়দার বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। হ্যা, প্রফেসর শাহীন কবীরের সাথে আমার সেই রকম সম্পর্কই ছিল যেখানে আমি তাকে এই অনুরোধ করতে বিচলিত ছিলাম না। তিনি তো আমার শাহীন আপা।
আমার আবেদন বাতিল হয়। সেটি বিএনপি-জামাতের সময়। একাডেমিক কাউন্সিলে আপা কেনো এই গবেষণা প্রস্তাবটি বাতিল করা হয়েছে সেটি শুধু জানতেই চাননি, তিনি এটি নিয়ে তীব্র যুদ্ধও করেন। কিন্তু সময়টি আপা বা আমার পক্ষে ছিল না। বাংলাদেশী পিএইচডির একজন ‘সোল-এজেন্ট’ আর তার অনুগামীদের কাছে পরাস্ত হয়ে উত্তেজিত আপা একাডেমিক কাউন্সিল থেকে বেরিয়েই আমাকে ফোন দেন। আমাকে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করতে বলেন এই যুক্তিতে যে পিএইচডিতে আবেদন করার সকল শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও আমার আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে। আপাকে শান্ত করি আমি। যে প্রতিষ্ঠানে বিদ্যা অর্জনের জন্যে যাবো সেই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সাথে বিরোধে জড়াতে আমার ইচ্ছে করেনি। তাছাড়া কার সাথে যুদ্ধ করবো! বিভাগের চেয়ারম্যান মন্তব্য করেছিলেন – আমি তো যুক্তরাজ্য থেকে ELT (English Language Teaching) তে মাস্টার্স করেছি, English Language -এ নয়। এটিও বলেছিলেন, বিদেশ থেকে অনেক সহজে ডিগ্রি নেয়া যায়, আমাদের এখানে পড়াশোনা অনেক বেশি করতে হয়। এজন্যে তাঁরা বিদেশী ডিগ্রি অতটা পছন্দ করেন না। দায়িত্বশীল মানুষের এধরণের যুক্তিহীন, হাস্যকর কথাবার্তা আপাকে উত্তেজিত করতো।
নানাবিধ কারণে আমার আর পিএইচডিতে এডমিশন নেয়া হয়নি। তবে আমি আর কখনো বাংলাদেশে পিএইচডির জন্যে আবেদন করিনি। ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিং এ University of Exeter থেকে কতটা এগিয়ে আছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আমি জানিনা। যাদের জানা দরকার তারাই যখন জানেন না, তখন আর আমার জেনে কী হবে! University of Exeter এর ছাত্র হতে পেরে আমি এখনো নিজেকে ধন্য মনে করি। না হয় নাই হলো বাংলাদেশী কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা।
২০১২ সালে আমি প্রফেসর শাহীন কবীরের সাথে মাত্র তেরো দিনে একটি পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের কাজ করছি যখন, তখন একটি অবাঞ্চিত কারণে আমার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবার আশংকা তৈরি হয়। এটির আভাষ পেয়ে বিকেল থেকে রাত একটা পর্যন্ত প্রতি ঘন্টায় আপা আমার খোঁজ নিয়েছেন। পুলিশ কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করে আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরে তিনি ঘুমাতে যান। সাথে এটিও জানিয়ে রাখেন কোনো ঝামেলা হলে আমি যেন সাথে সাথেই তাঁকে ফোন দেই সেটি যত রাতেই হোক না কেনো। তিনি নিশ্চিত ছিলেন আমার কোনো ক্ষতি হবে না কারণ উনি আমাকে চেনেন। সেদিন মনে হয়েছিল আপা আমাকে একেবারে মা-দূর্গার মতো দশ হাতে আগলে রেখেছিলেন।
নবম-দশম শ্রেণির ইংরেজি পাঠ্যপুস্তক যখন লেখা হয় সেই সময় কর্তৃপক্ষ চেয়েছিলেন আপা যেন বইটির দায়িত্ব নেন। অধ্যাপক কবীর চৌধুরী তখন সদ্য প্রয়াত। নানাবিধ কারণে কারো কারো প্রতি বিরক্তও ছিলেন শাহিন আপা। কিছু কাজের ধারার সাথেও একমত হতে পারছিলেন না তিনি। তাই সরাসরি না করে দেন। অনেক অনুরোধ করেও তাঁকে রাজি করানো গেল না। তাঁর সাফ কথা – সব বই উনি কেন লিখবেন! দেশে আর লেখক নেই! পিতৃবিয়োগ পরবর্তী মানসিক অবস্থায় তিনি মনোযোগ দিতে পারবেন না, তাই দায়সারা কাজও করবেন না। আবার যেটি প্রয়োজন মনে করেছেন সেটির জন্য মিটিং শেষে দৌড়ে গিয়ে হয়ত কোন মন্ত্রী মহোদয়কে বলেছেন – ‘… ভাই, এটা কিন্তু করতে হবে’।
আপার সাথে একত্রে কাজ করার সময় কোন এক উচ্চ পদস্থ ব্যক্তির আচরণে এক স্কুল শিক্ষক বিরক্ত বোধ করছিলেন। সেই স্কুলশিক্ষক আপার কাছে সমস্যাটি জানালে আপা সেই সমস্যার সমাধান করেছেন খুব সুকৌশলে অথচ দৃঢ়তার সাথে। আর এক উচ্চ পদস্থ কর্তা ব্যক্তি তাঁর সাথে অভব্য আচরণ করলে এই সদা হাস্যময় মানুষটি তাঁকে চুড়ান্ত শিক্ষা দিতেও দ্বিধা করেননি। আবার সেটি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন হাসতে হাসতে। বলেছেন – ‘দেখো তো, কী বেয়াদব! দিছি একটা শিক্ষা দিয়ে’।
পাঠ্যপুস্তক লিখেই উনি ক্ষান্ত হননি। সেই বই এর গেট-আপ সেট-আপ কেমন হবে একদম ছবি এঁকে বুঝিয়ে দিয়েছেন আর্টিস্টকে। আবার আর্টিস্ট যেনো-তেনো ছবি আঁকলে হবে না, উনি বকা-ঝকা দিয়ে আর্টিস্টকে বাধ্য করেছেন একাধিকবার একই ছবি আঁকতে যাতে সেটি সঠিক হয়। আর এর ফল চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ইংরেজি পাঠ্য পুস্তকের চমৎকার অলংকরণ।
একবার কোনো এক প্রকল্প থেকে একটি ম্যানুয়াল লেখা হলে প্রফেসর শাহীন কবীর সম্পাদক এবং আমি ও প্রফেসর মোঃ জুলফিকার হায়দার লেখক হিসেবে কাজ করি। পান্ডুলিপি সময়মত জমা দেবার পরেও সেটি যথা সময়ে ছাপা না হওয়াতে উন্মুক্ত অনুষ্ঠানে উনি সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানতে চান কেনো বইটি ছাপা হতে এতো লম্বা সময় লাগলো। প্রফেসর শাহীন কবীরের উষ্মা ও যুক্তির সামনে দাঁড়িয়ে সচিব মহোদয় তাৎক্ষনিকভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন পনেরো দিনের মধ্যে এই বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করার জন্যে। এভাবে যেটি উনি সঠিক মনে করেছেন, সেটি বলার জন্যে কে কতটা প্রভাবশালী সেই বিচার তিনি করেননি। এজন্যে তিনি অনেকের বিরাগভাজন হয়েছেন সন্দেহ নেই কিন্তু নিজের কাছে সৎ থেকে, সাহস করে অপ্রিয় সত্যি কথা বলার মতো বুকের পাটা তাঁর ছিল। ব্যাক্তিগত লাভালাভের কথা তিনি চিন্তা করেননি বলেই এই প্রতিবাদী কন্ঠস্বর তিনি ধরে রাখতে পেরেছিলেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত।
একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক লেখার সময় প্রফেসর শাহীন কবীর কো-এডিটর। আমি ও প্রফেসর মোঃ জুলফিকার হায়দার লেখক। আমরা দু’জনে কলেজ শিক্ষক; অন্য সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম করা অধ্যাপক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব প্রথিতযশা একজন শিক্ষক আমাদের দু’জনকে খুবই তাচ্ছিল্য করতে থাকেন। মন্তব্য করেন যে তাঁর সন্দেহ হয় আমরা ১৫ মিনিট শুদ্ধ ইংরিজিতে কথা বলতে পারবো কিনা। শাহীন আপা সাথে সাথে তাঁকে থামিয়ে দিয়ে এরকম আলটপকা মন্তব্য করতে মানা করেন। তিনি উক্ত গুণীজনকে আমাদের কাজ সম্পর্কেও ধারনা দেন।
আমি হয়ত কবিতার একটা বই বের করার সাহসই পেতাম না যদি শাহীন আপা আমাকে সেই ২০১৪ সালেই লেখা চালিয়ে যাবার পরামর্শ না দিতেন। আমার যে কবিতা তাকে খুব টেনেছিল সেটি হলো – বলা হয়নি (নৈঃশব্দের পদাবলী)। শেষ যেদিন আমার সাথে দেখা, সেদিন তাঁকে শুনিয়েছিলাম নিজ মুখে আকাশ হবো আরহারিয়ে যেতেই তো চাই (নৈঃশব্দের পদাবলী)। খুব খুশি হলেন বই বের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি জেনে।
সিঙ্গাপুরে উনি অসুস্থ। তবুও যোগাযোগ করে যখন তাঁকে জানালাম আমার বই এর জন্যে একটা মুখবন্ধ লিখবেন উনি এটি আমার খুব ইচ্ছে – সানন্দে রাজি হলেন। কেমোথেরাপির জন্যে একটু দেরি হবে জানিয়ে আমাকে পাণ্ডুলিপি পাঠাতে বললেন। অসুস্থ অবস্থায়ই আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থের মুখবন্ধ লিখলেন আপা। এখানে যে ছবিটি ব্যাবহার করা হয়েছে সেটি ও আগের এপিসোডে দেয়া ছবি পাঠিয়ে আমার যেটি পছন্দ সেটি বেছে নিতে বললেন। আমি আমার কাব্যগ্রন্থেও এই ছবিটিই দিয়েছি কারণ সেই সময় পর্যন্ত এটিই তাঁর সর্বশেষ ছবি। আপাকে অনুরোধ করেছিলাম সিঙ্গাপুরে তাঁর ঠিকানা পাঠাতে। বলেছিলাম কুরিয়ারে পাঠিয়ে দেবো বইটি। কিন্তু সেই ঠিকানাটি আর উনি পাঠাতে পারেন নি। অন্যদিকে নিজ হাতে নিজের লেখা বইটিও আর তাঁকে দেয়া হলো না। আর কোনোদিন হবেও না। এটি আমার জন্যে চূড়ান্ত এক মন খারাপের বিষয় হয়েই থাকবে আজীবন।
প্রফেসর শাহীন কবীর আরেকটি কাজ করে যেতে পারেননি। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ইংরেজি পাঠ্যপুস্তকের নতুন কন্টেন্টগুলি দেখে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটি পারেন নি। বললেন, শরীর আর পারছে না। সেটিই আমার সাথে তাঁর সবশেষ কথা। বলেছিলেন, পরেরদিন সকালে কল দেবেন, দেননি। নিশ্চয়ই দিতে পারেননি।
এবছরের শুরুতে তিনি দেশে এসেছিলেন ক’দিনের জন্যে। খুব একটা কারো সাথে দেখা করেন নি। করোনা সংক্রমনের ভয় ছিলো। তবুও আমাকে স্বপরিবারে যেতে বলেছিলেন। আমাদের তিনজনের সাথেই ছবি তুললেন, গল্প করলেন প্রায় দু’ ঘণ্টা। আমরা কিছু খাবার নিয়ে গিয়েছিলাম তাঁর জন্যে। একসাথেই খেলেন। খুব পছন্দ করলেন ডাবের পুডিং। আমার স্ত্রীর কাছ থেকে জেনে নেন কীভাবে তৈরি করতে হয় সেটি। আমার পুত্রকে বই উপহার দেন। স্ত্রীকে শাড়ি। আমার জন্যে বই রেখে গিয়েছিলেন গার্ড এর কাছে। সেটি আর আনা হয়নি। সেদিন খুব খারাপ লেগেছিল আপাকে দেখে। শরীরটা একদম ভেঙ্গে গিয়েছে। আপার যে এক মাথা চুল সেগুলি অপসৃত হয়েছে। কিন্তু সেই হাসি, সেই উজ্জ্বল চোখের দৃষ্টি, সেই গলার স্বর, একই রকম শুদ্ধ উচ্চারণে আদর মাখানো ডাক তখনও একদম অমলিন।
প্রফেসর শাহীন কবীর দেশে ফিরবেন শুনেছিলাম প্রফেসর কিশওয়ার কামালের কাছ থেকে। ফিরেছেন শুনলাম যখন তখন আমি পুজোর বন্ধে বাড়ি যাবার জন্যে ঢাকা এয়ারপোর্টের লাইনে দাঁড়িয়ে। তার মাঝেও শাহীন আপাকে টেক্সট করি। ফিরে এসে তাঁর সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে কিশওয়ার আপা জানান একটু দেরি করতে। সেই দেরি চিরস্থায়ী দেরি হয়ে গেলো। দাপ্তরিক কাজে যশোর ছিলাম। ১১ নভেম্বর ঢাকায় ফিরেই কিশওয়ার আপার এসএমএস পেয়ে সব জানলাম যখন, তখন আমি শূন্য। আপার বাসায় ছুটে গিয়েও তাঁকে শেষ একবার দেখতে পেলাম না।
এই হচ্ছে খুব সংক্ষেপে আমার দেখা শাহীন আপা। এমন অসাম্প্রদায়িক, আন্তরিক, অমায়িক, বুদ্ধিদীপ্ত, প্রগতিশীল, নির্লোভ ও সাহসী মানুষ আমি আমার এই জীবনে খুব কম দেখেছি। সামনের দিনগুলিতে খুব একটি দেখবো সেরকমটিও মনে হয় না। নিরহংকারী এই মানুষটির মহাপ্রস্থান আমার সমস্ত অস্তিত্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে শেষ বিদায়ের সময় তাঁকে দেখতে না পেরে। যে চেনা ও জানা শাহীন আপা আমার আত্মার ও চৈতন্যের সাথে মিশে আছে, উনি তাই থাকুন। পরকাল বলে যদি কিছু থাকে সেখানেও উনি আনন্দময় থাকুন, সেখানেও রবীন্দ্রসংগীত শুনুন ও তাঁর চর্চা করুন, সেখানেও আমাদের জন্যে লিখুন। আর ২০০০ সাল থেকে যে অমলিন হাসি দেখেছি তাঁর মুখে সেই হাসিতে যেন বারবার বলে যান … গৌতম, এটি করো, এটি এভাবে না করে ওভাবে করো। আর ভুল হলে মন খুলে যেন বকা দেন।
ভালো থাকুন পরপারে আমার ও আমাদের সকলের প্রিয় শাহীন আপা। তাঁর জন্যে অনিঃশেষ প্রণাম।
(চলবে)