নাটোর সদর উপজেলার বড়হরিশপুর ইউনিয়নের লালমনিপুর গ্রামের রাজশাহী সিটি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী মেধাবী ছাত্রী বিনা খাতুন।গত ২১ নভেম্বর ২০২১ খ্রিস্টাব্দ রবিবার বিকেলে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে, বখাটে ছেলের নিক্ষিপ্ত এসিডে ঝলসে যায় তার মুখমণ্ডল।
এলাকাবাসী ও স্বজনরা তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করেন। অ্যাম্বুলেন্স মেধাবী ছাত্রীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। রামেক হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (ইএমও) আবদুল কাদির জানান, ‘পুরো মুখ ঝলসে গেছে। আহতের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
রাজশাহী থেকে রোগীকে ঢাকা শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করা হয়।বর্তমানে রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। তবে চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে অপারগ দরিদ্র পিতা নুরুল ইসলাম।
গ্রামবাসীরা বলছেন, দিনার বাবা নুরুল ইসলাম পেশায় একজন দলিল লেখক, দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি অসুস্থ, তাই কর্মস্থলে যেতে পারেন না। মেয়েটির পড়াশোনার খরচ চালাতে তিনি হিমশিম খাচ্ছিলেন। এপর্যন্ত চিকিৎসার ব্যয় বিভিন্ন আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী বহন করে আসছেন।
বিনার বাবা নুরুল ইসলাম জানান, তিনি পেশায় একজন দলিল লেখক। দীর্ঘ দিন ধরে হার্ট অসুখে ভূগছেন। তার মেয়ের সাথে এমন ঘটনা ঘটতে পারে কল্পনাই করতে পারেননি তিনি। এত ব্যয়বহুল চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে অপারগতা প্রকাশ করে প্রতিবেদককে তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন-
তার মেয়ে ফাইভ ও এইটে বৃত্তি পেয়েছে, এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছে। বিনা এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। মেয়েকে নিয়ে তিনি স্বপ্ন দেখতেন ডাক্তার বানাবেন। এখন সব স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে গেল। কি হবে মেয়ের ভবিষ্যত ? তিনি এই অন্যায়ের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।
মুমূর্ষু এই মেধাবী রোগীর চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে আসবে সমাজের বিত্তবানসহ সরকার। ভবিষ্যতের দায়িত্ব নেবে রাষ্ট্র। উল্লাস উচ্ছাসের জীবনে ফিরবে মেধাবী ছাত্রী বিনা, এমন প্রত্যাশা নাটোরের সচেতন মহলের।