পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে কোভিড টিকা ক্রয়ের হিসাব প্রকাশ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আলোচনার জন্ম দিলেও সংসদে এ খাতে ব্যয় প্রকাশ করতে চাননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বৃহস্পতিবার সংসদ অধিবেশনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নন-ক্লোজার এগ্রিমেন্টের’ মাধ্যমে টিকা কেনার কারণে সংসদে অর্থ খরচের হিসাব প্রকাশ করা সমীচীন হবে না। আইন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে টিকা কেনা হয়েছে।
গত ৯ জুলাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে করোনা চিকিৎসা ব্যয় সম্পর্কে জানায়। বিজ্ঞাপনে বলা হয়, ১ কোটি ১ লাখ ৫০ হাজার ডোজ টিকা কেনা হয়েছে (ওই সময় পর্যন্ত)। সেই হিসেবে প্রতি ডোজ টিকা ৩ হাজার টাকা হিসাবে মোট ৩ হাজার ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
এদিন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উত্থাপিত হয়। এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে সততা ও স্বচ্ছতার নিশ্চিত করে ভ্যাকসিন কেনা হয়েছে। ২১ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার ডোজ টিকা কেনা হয়েছে। এর মধ্যে চীন থেকে ৭ কোটি ৭০ লাখ ডোজ সিনোফার্ম, ৭ কোটি ৫১ লাখ ডোজ সিনোভ্যাক, ভারত থেকে ৩ কোটি কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সের আওতায় ২ কোটি ৯৭ লাখ ২০ হাজার সিনোফার্মে টিকা দেশে এসেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণের জন্য মোট ২৯ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ডোজ টিকার সংস্থান করা হয়েছে। এ পর্যন্ত (১৩ নভেম্বর) ৮ কোটি ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫ কোটি ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৪ জনকে প্রথম ডোজ এবং ৩ কোটি ২৮ লাখ ৫ হাজার ১৯০ জনকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।
সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পুষ্টিহীনতা বিষয়ে সার্বজনীন (সব বয়সের) মানুষের নির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান নেই। বিডিএইচএস-এর পরিসংখ্যান মতে ৫ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে একটি চিত্র তুলে ধরেন তিনি।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, খর্বাকৃতির হার এসডিজি (২০৩০) লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ১২ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার কথা আছে। ২০১৭-১৮ সালে এই হার ছিল ৩১ শতাংশ; ২০০৭ সালে ছিল ৪৩ শতাংশ। কৃষকায় ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার কথা। যা রয়েছে ৮ শতাংশ; ২০০৭ সালে ছিল ১৭ শতাংশ। কম ওজনের লক্ষ্যমাত্রা ১০ শতাংশের নিচে নামানোর কথা রয়েছে। ২০০১৮-১৯ সালে ছিল ২২ শতাংশ; ২০০৭ সালে ছিল ৪১ শতাংশ। অতি ওজন ১ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রায় ২০১৭-১৮ সালে ২ শতাংশ; ২০০৭ সালে ছিল ১ দশমিক ১ শতাংশ।
তথ্য অনুযায়ী, ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের অপুষ্টিজনিত কম ওজন ২০১৭-১৮ সালে ছিল ১২ শতাংশ; ২০০৭ সালে ছিল ৩০ শতাংশ। অতি ওজন ৩২ শতাংশ; যা ছিল ১২ শতাংশ। ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের কম ওজনের ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের পাশাপাশি অতি ওজনের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩২ শতাংশ।