বিচার কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার নির্দেশনার পর এবার বদলি করা হলো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭, ঢাকার বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বেগম মোছা. কামরুন্নাহারকে। রবিবার সন্ধ্যায় তাকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হয়।
আইন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭, ঢাকার বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বেগম মোছা. কামরুন্নাহারকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহারপূর্বক আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।
ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন বিচারক বেগম কামরুন্নাহার।
এর আগে রবিবার সকালে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওই বিচারককে বিচারিক কাজ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি আইন মন্ত্রণালয়কে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে বলে।
রাজধানীর বনানীতে রেইনট্রি হোটেলে দুই নারীকে ধর্ষণের বহুল আলোচিত মামলায় গত বৃহস্পতিবার পাঁচ আসামির সবাইকে খালাস দিয়ে রায় দেন ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কামরুন্নাহার।
২০১৭ সালের ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ৬ মে বনানী থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়।
রায়ের পর্যবেক্ষণে ঘটনার ৩৮ দিন পর ধর্ষণের মামলা করার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারক কামরুন্নাহার। তিনি বলেন, ৭২ ঘণ্টা পর মেডিকেল পরীক্ষা করা হলে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় না। ওই সময়ের পর পুলিশকে কোনো ধর্ষণ মামলা না নিতেও পরামর্শ রাখেন তিনি।
ধর্ষণ মামলা নিয়ে বিচারকের এমন মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিচারকের বিবেচনা বোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে প্রতিক্রিয়া জানান।
এরমধ্যে শনিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এই বিচারকের পর্যবেক্ষণকে অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দেন। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি পাঠানোর কথা বলেছিলেন।