১৯৮৬ সালে বিশ্বের সব থেকে বড় গাড়ি হিসেবে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে জায়গা করে নেয় একটি লিমুজিন গাড়ি। সাধ করে গাড়িটির নাম রাখা হয়েছিল ‘দ্য আমেরিকান ড্রিম।’
সাধারণত একটি গাড়ি খুব বেশি হলে ফুট আস্টেক লম্বা হয়। কিন্তু এই গাড়িটি ছিল ১০০ ফুটের। মানে পর পর তেরো-চোদ্দোটি গাড়ি দাঁড়িলে যতটা হয়, তার সমান। এই গাড়িটির ডিজাইন করেছেন- জে ওরবার্গ। যিনি মূলত সিনেমার কাজে লাগে এমন গাড়ি তৈরি করার জন্যই বিখ্যাত। তাঁর ডিজাইনের এই গাড়িতে ছিল মোট ২৬টি চাকা। গাড়িটি দু’দিক থেকেই চালানো যেত। লোকাল ট্রেনের মতো। গাড়ির সামনে এবং পিছনে ছিল মোট ৮টি ইঞ্জিন।
একটা বিলাসবহুল হোটেলে যা যা থাকে, এই গাড়িতে তার সব ক’টাই ছিল। ছিল টিভি, ফ্রিজ, ফোন, এমনকী ইন্ডোর গেমসের ব্যবস্থাও। ছিল ছোটখাটো একটি গল্ফ খেলার জায়গাও। ছিল সুইমিং পুল থেকে হেলিপ্যাডও। এই গাড়িতে এক সঙ্গে ৭০ জন যেতে পারত।
এই গাড়িটি বেশ কয়েকটি সিনেমায় ব্যবহারও করা হয়েছে। তা ছাড়াও ব্যক্তিগত কারণে কেউ ভাড়া নিতে চাইলে এই গাড়িটিকে ভাড়াও দেওয়া হতো। সেই সময় লোক বুঝে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ২০০ ডলার করে ভাড়া নেওয়া হত।
এত কিছু থাকা সত্ত্বেও গাড়িটিকে কিন্তু বেশি দিন টিকিয়ে রাখা যায়নি। কারণ এর রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতির জন্য যে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন ছিল তা কুলিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছিল না।
২০১২ সালে এই গাড়ির চাকা চিরকালের জন্য থমকে যায়। চাকা এবং জানালা ছাড়া পুরো গাড়িটাই নষ্ট হয়ে যায়।
চোখ ধাঁধানো সেই গাড়িটিকে আবার আগের চেহারায় ফিরিয়ে আনার তোড়জোড় শুরু হয় ২০১৯ সালে। কিন্তু অতিমারির কারণে সেই কাজটি থমকে যায়। তবে সারা দুনিয়ার গাড়ি প্রেমীরা এখন আশা করছেন, খুব তাড়াতাড়িই এই গাড়িটিকে ফের প্রকাশ্য রাস্তায় ছুটতে দেখা যাবে।