ভারতের মর্যাদাপূর্ণ পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির (বীর প্রতীক)। গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি ভবনে এক অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দর কাছ থেকে তিনি এই পুরস্কার গ্রহণ করেন। খবর বাসসের।
ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ভারতরত্ন। এরপর রয়েছে পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ ও পদ্মশ্রী। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
কর্নেল জহির ১৯৫১ সালের ১১ ই এপ্রিল কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দিতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৬৯ সালের শেষে ক্যাডেট হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে আগস্টের শেষে তিনি পাকিস্তান থেকে পালিয়ে যুদ্ধে যোগ দিতে ভারতে আসেন। জহির ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দেন। সূত্র জানায়, তিনি সিলেট অঞ্চলে ৪ নং সেক্টরের অধীনে ২য় আর্টিলারি বাহিনীর সংগঠিত করেন। যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ‘বীর প্রতীক’ উপাধি প্রদান করে। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানের জন্য তাকে সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি প্রদানের জন্য ‘শুধুই মুক্তিযুদ্ধ’ নামের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।
কাজী সাজ্জাদ আলী জহিরের পাশাপাশি বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত বিশারদ সন্জিদা খাতুনও ‘পদ্মশ্রী পুরস্কার-২০২১’–এর জন্য মনোনীত হয়েছেন।
ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীকে জনসেবার (পাবলিক অ্যাফেয়ার্স) জন্য ২০২০ সালে মরণোত্তর পদ্মভূষণ সম্মাননা দেওয়া হয়। নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে গত সোমবার মোয়াজ্জেম আলীর স্ত্রী তুহফা জামান আলী রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দর কাছ থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেন।
একই দিনে বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক, প্রত্ন তাত্ত্বিক অধ্যাপক এনামুল হক ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দর হাত থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কার গ্রহণ করেন।
২০১৪ সালে বাংলাদেশের হাইকমিশনার হয়ে ভারতে আসেন মোয়াজ্জেম আলী। এরপরে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি ঢাকায় ফিরে যাওয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যে মারা যান। তিনি ছিলেন প্রখ্যাত লেখক ও সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর ভ্রাতুষ্পুত্র।