করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় মুখে খাওয়ার নতুন ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। বাংলাদেশে ওষুধটি উৎপাদন করবে কয়েকটি কোম্পানি।
মঙ্গলবার ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র আইয়ুব হোসেন গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে উৎপাদনের অনুমোদন পেয়েছে ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
সূত্র জানায়, দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব ওষুধ কোম্পানি এই ওষুধ উৎপাদনের অনুমোদন চেয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কাছে আবেদন করেছে। খুব শিগগির এদের ‘রেসিপি’ অনুমোদন দেওয়া হবে। এসকেএফ, স্কয়ার, রেনেটা, ইনসেপ্টা, বিকনসহ আট থেকে ১০টি প্রতিষ্ঠান এই তালিকায় আছে।
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কারের পাশাপাশি খাওয়ার বড়ি আবিষ্কারেও সমানে কাজ করে আসছিলেন বিজ্ঞানীরা। প্রাণ সংহারক এ ব্যাধির প্রতিরোধে সম্প্রতি মুখে খাওয়ার একটি বড়িতে আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি মার্ক ও ফাইজার। মুখে খাওয়ার এই ওষুধটি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন অধ্যায় খুলে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর থেকে মুখে খাওয়ার বড়ির জন্য সবারই অপেক্ষা ছিল। অবশেষে বেশ কয়েকমাসের গবেষণার পর এই কাজে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান মার্ক ও ফাইজার ভালো ফলাফল পেয়েছে। করোনার উপসর্গ দেখা দিলেই মুখে খাওয়ার বড়িটি নেওয়া শুরু করতে হবে। ফলে গুরুতর অসুস্থ হওয়া এবং হাসপাতালে যাওয়া এড়ানো সম্ভব হবে।
মার্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন এই বড়িটির নাম দেওয়া হয়েছে মলনুপিরাভির। কার্যকারিতা যাচাইয়ে এরইমধ্যে ৭৭৫ জন রোগীর ওপরে বড়িটি প্রয়োগ করে কাক্সিক্ষত ফলাফল পাওয়া গেছে। যাদের চিকিৎসায় বড়িটি ব্যবহার করা হয়েছে তাদের মধ্যে মাত্র সাত দশমিক তিন শতাংশ রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় মলনুপিরাভিরের ব্যবহারের অনুমোদন চেয়ে মার্ক ও ফাইজার উভয় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আলাদা করে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রশাসনের কাছে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। তবে বড়িটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্য এখনো সামনে না আসায় এটি দিয়ে রোগীর চিকিৎসার বিষয়টি মূল্যায়ন করা এখনই কঠিন।
এই ওষুধটির সাফল্য করোনাভাইরাস সংক্রমণের গুরুতর পরিণতি রুখে দিতে নতুন যুগের সূচনা করবে বলে আশার কথা শুনিয়েছেন ব্রিটিশ ভাইরোলজিস্ট স্টিফেন গ্রিফিন। আর ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল মূল্যায়নের আগে পর্যন্ত মার্কিন দুই কোম্পানির নতুন ওষুধ তৈরির ঘোষণা সতর্কতার সঙ্গে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ফ্রান্সের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ কারিন ল্যাকোম্ব।