নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনী এলাকার শ্রী শ্রী রাধামাধব জিউর মন্দিরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তারা ফেসবুকে উস্কানিমূলক বক্তব্যে প্ররোচিত হয়ে ওই হামলা ও লুটতরাজ চালায় বলে জানিয়েছে বাহিনীটি।
ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ যাচাইয়ের পর রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীর ডেমরা, নারায়ণগঞ্জ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
তারা হলেন- মনির হোসেন রুবেল, জাকের হোসেন রাব্বি, মো. রিপন এবং মো. নজরুল ইসলাম সোহাগ।
তাদের কাছ থেকে সাতটি পিতলের তৈরি মূর্তি, তিনটি সিদুঁর কৌটা, বিশটি বাতির কৌটা, দুইটি দ্রুপতি, পাঁচটি পঞ্চ বাতির দানি, হাত ঘণ্টা, কুলা, পঞ্চ পাতার পল্লব, একটাকা মূল্যের ৫৫০টি বাংলাদেশি মুদ্রার কয়েন, ১১টি গ্লাস, এবং ৪০টি পিতলের পূজার কাজে ব্যবহৃত ভাঙা বা অসম্পূর্ণ অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এলিট ফোর্স র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাব জানায়, সাম্প্রতিক কুমিল্লায় ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ও উসকানিমূলক তথ্য প্রচার করে জনসাধারণের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা চালায়। ১৫ অক্টোবর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানাধীন চৌমুহনী এলাকায় কিছু দুষ্কৃতিকারী শ্রী শ্রী রাধামাধব জিউর মন্দিরে হামলা ও লুটতরাজ চালায়। ঘটনার কিছু ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা হয়। ঘটনার পর হামলা ও লুটকারীদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তার করতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে।
তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১১ ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত রাত থেকে অভিযান শুরু করে। রাজধানীর ডেমরা, নারায়ণগঞ্জের বন্দর এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে চৌমুহনীর মন্দিরে হামলা এবং লুটপাটে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গ্রেপ্তার রুবেল, রাব্বী এবং রিপন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উস্কানিমূলক বক্তব্যে প্ররোচিত হয়ে প্রত্যক্ষভাবে হামলায় অংশগ্রহণ করেন। হামলার পরে গ্রেপ্তার রুরেল, রাব্বী এবং রিপন দুইটি বস্তায় মন্দিরের বিভিন্ন পিতলের পূজার সামগ্রীসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যান। তারা গ্রেপ্তার সোহাগের সহযোগিতায় ধাতব জিনিসগুলো বিক্রির পরিকল্পনা করেন। মন্দিরে মালামাল লুট করার সময় রুবেল-এর ভিডিও ফুটেজ মিডিয়াতে ভাইরাল হয়। গ্রেপ্তার রুবেল, রাকিব, রিপন এবং সোহাগ বিভিন্ন পেশায় জড়িত। রুবেলের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় চুরি ও ছিনতাই মামলা রয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার মনির হোসেন সরাসরি হামলায় জড়িত ছিলেন। বাকি তিনজনও তাদের সঙ্গে ছিলেন। সোহাগের সহযোগিতায় হামলার সময় লুটপাট করা জিনিস বিক্রির জন্য সেখান থেকে বস্তা ভর্তি করে সরিয়ে ফেলা হয়।