বিছানায় পড়ে আছে স্ত্রী রোজিনা আক্তার আর ৯ বছরের মেয়ে সুমাইয়ার নিথর দেহ। ঘরের সিলিংয়ে রশিতে ঝুলছে গলায় ফাঁস দেওয়া স্বামীর মরদেহ। এ ঘটনা ঘটেছে সাভারের আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায়। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী রোজিনা (২৬) ও মেয়ে সুমাইয়াকে শ্বাসরোধে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন রোজিনার স্বামী সবুর মিয়া (৩০)।
শনিবার (৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে জামগড়া বটতলা এলাকার ফজর আলীর মালিকানাধীন টিনসেট বাড়ির একটি কক্ষ থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রোজিনা ও সবুরের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলা ফুলবাড়ি থানার চরগোরুক মন্ডল গ্রামে। রোজিনা একটি পোশাক কারখানা চাকরি করতেন ও সবুর অটোরিকশা চালক ছিলেন। মেয়ে সুমাইয়া স্থানীয় একটি মাদরাসায় পড়ত।
সবুরের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী আরজিনা বেগম জানান, রোজিনা ৬০ হাজার টাকায় সবুর মিয়াকে একটি অটোরিকশা কিনে দেয়। গত বুধবার প্রথম দিনেই অটোরিকশাটি চুরি হয়ে যায়। বিষয়টি ভয়ে স্ত্রীকে জানায়নি সবুর। পরে বিষয়টি স্ত্রী জেনে গেলে তাদের মধ্যে কলহ বাধে। এই কলহের জেরে রাগ করে সবুর এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।
রোজিনার বোন রাশেদা বেগম বলেন, ‘আমরা সবুরের ভাড়া বাসার পাশেই থাকি। অটোরিকশার চুরির ঘটনা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার কথা শুনেছি। আমি গত শুক্রবার তাদের মোবাইলে ফোন দিয়েও পাইনি। এর আগে সবুর মিয়া রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন।’
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। দুইদিন ধরে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। পরে প্রতিবেশীরা ওই ঘরের টিনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে স্বামীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। বিষয়টি আশুলিয়া থানা পুলিশকে তারা অবহিত করে।
আশুলিয়া থানার এসআই আল মামুন কবির জানান, প্রাথমিক সুরহাতালে ধারণা করা হচ্ছে, স্ত্রী ও মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছে স্বামী। ঘটনাটি এক দিন আগে হতে পারে। তবে ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে কি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা বলা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলে ও আরো তদন্তের পর জানা যাবে। এই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান তিনি।