ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধির প্রতিবাদে ডাকা অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও বাংলাদেশে দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে সাধারণ যাত্রীদের। যানবাহন না পেয়ে নিরুপায় হয়ে পড়েছেন তারা।
শুক্রবারের মতো শনিবারও সারাদেশে বাস বন্ধ আছে। তবে ব্যক্তিগত গাড়ি ও অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল করছে রাস্তায়। রাজধানীর প্রতিটি মোড়ে গাড়ির অপেক্ষায় থাকা অসংখ্য মানুষের ভিড় করতে দেখা গেছে। বিআরটিসি বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে তাদের।
আগের দিনের মত আজও ঢাকায় বিআরটিসির বিভিন্ন ডিপো থেকে বাস ছেড়েছে। একটি বাস এলেই তাতে হুড়মুড়িয়ে উঠছেন যাত্রীরা। অনেকে বাসে উঠতে না পেরে বিকল্প উপায়ে তাদের কর্মস্থলে রওনা হয়েছেন। এজন্য রিকশা ও অটোরিকশায় কয়েকগুণ ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে।
শনিবার সকাল থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটারসাইকেল আর রিকশা ছাড়া তেমন কোনো যানবাহন চোখে পড়েনি। বাস না থাকার সুযোগে অটোরিকশা এবং রিকশা চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছেন। পথে বিআরটিসির বাস চললেও সেগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। অনেক যাত্রীকে ঝুঁকি নিয়ে বাসের দরজায় ঝুলতে দেখা গেছে।
মানুষকে জিম্মি করে এই আন্দোলনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। বাংলামোটরে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা আনিস নামে একজন বলেন, ‘পরিবহন মালিকদের দাবি অযৌক্তিক। কারণ তারাতো বাসের ভাড়া দেবেন না। মানুষের পকেট থেকেই এই টাকা যাবে। সরকারের সঙ্গে আলোচনা করলেই এই সমস্যার সমাধান হতো। মানুষকে জিম্মি করে আন্দোলন করা তাদের জন্য ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে।’
শ্যামলী থেকে কারওয়ানবাজারে যাবেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা যুবক আরমান। তিনি বলেন, বাস না থাকায় তিনি অটোরিকশা ধরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ভাড়ায় বনেনি। শেষ পর্যন্ত আরেকজনের সঙ্গে শেয়ার করে রিকশায় অফিসের উদ্দেশে রওনা হয়েছি।
উত্তরা এলাকায় রিকশা ভ্যান বা অটোরিকশায় করে বহু মানুষকে ঢাকার দিকে আসার চেষ্টা করতে দেখা যায়। আবদুল্লাহপুরে কিছু মোটরসাইকেল চালকও অর্থের বিনিময়ে যাত্রীদের বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছেন। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ভোগান্তিতে পড়া এসব মানুষ ধর্মঘটের নিরসন চান।
সরকার গত বুধবার রাত ১২টা থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়েছে। এতে বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি মালিকরা শুক্রবার ভোর থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণা কেন্দ্রীয়ভাবে নয়, স্থানীয়ভাবে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি পরিষ্কার করা হয় সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে। সংগঠনটি জানায়, পণ্যবাহী যানের পাশাপাশি শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে বাস চালাবেন না বাস মালিকরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল সকাল ছয়টা থেকে বাস বন্ধ রয়েছে। আর এতে ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ।